ترجمة سورة الأحقاف

الترجمة البنغالية للمختصر في تفسير القرآن الكريم

ترجمة معاني سورة الأحقاف باللغة البنغالية من كتاب الترجمة البنغالية للمختصر في تفسير القرآن الكريم.

১. হা-মীম, এ সব যুক্তাক্ষরের ব্যাপারে আলোচনা সূরা বাকারার শুরুতে করা হয়েছে।
২. কুরআন সেই প্ররাক্রমশালী সত্তার পক্ষ থেকে অবতীর্ণ যাঁকে কেউ পরাস্ত করতে পারে না। যিনি তাঁর সৃষ্টি ও পরিচালনায় প্রজ্ঞাবান।
৩. আমি আসমান, যমীন ও এতদুভয়ের মাঝে যা কিছু রয়েছে সেগুলোকে অনর্থক সৃষ্টি করি নি। বরং এগুলোকে এক মহৎ উদ্দেশ্য নিয়ে সত্যসহকারে সৃষ্টি করেছি। তন্মধ্যে রয়েছে, বান্দারা এর মাধ্যমে তাঁকে চিনবে। ফলে এককভাবে তাঁরই ইবাদাত করবে। রবং তাঁর সাথে কাউকে শরীক করবে না। উপরন্তু তাদেরকে যমীনে প্রতিনিধিত্ব প্রদানের দাবি হিসাবে এক আল্লাহর জ্ঞানে তাদের আয়ু অবশিষ্ট থাকা অবধি দায়িত্ব পালন করবে। আর যারা আল্লাহকে অস্বীকার করেছে তারা আল্লাহর কিতাবে যা থেকে তাদেরকে ভীতি প্রদর্শন করা হয়েছে তারা তা থেকে বিমুখ। তারা এ নিয়ে কোন পরোয়া করে না।
৪. হে রাসূল! সত্য থেকে বিমুখ এসব মুশরিকদেরকে আপনি বলুন: তোমরা আল্লাহর পরিবর্তে যে সব দেবতার পূজা করো তাদের ব্যাপারে সংবাদ দাও যে, তারা যমীনের কোন্ অংশ সৃষ্টি করেছে? তারা কি পাহাড় সৃষ্টি করেছে? তারা কি নদী সৃষ্টি করেছে? না কি তাদের অংশদারিত্ব রয়েছে আল্লাহ কর্তৃক আসমানসমূহ সৃষ্টিতে। তোমরা আমার নিকট কুরআনের পূর্বে আল্লাহ পক্ষ থেকে অবতীর্ণ কোন কিতাব নিয়ে আস কিংবা পূর্বেকার লোকদের রেখে যাওয়া অবশিষ্ট জ্ঞান নিয়ে আসো। যদি তোমরা তোমাদের এ দাবিতে সত্য হয়ে থাক যে, দেবতারা ইবাদাতের হকদার।
৫. যে ব্যক্তি আল্লাহ ব্যতীত এমন দেব-দেবির পূজা করে যে কিয়ামত অবধি তার ডাকে সাড়া দিবে না। বস্তুতঃ তারা আল্লাহর পরিবর্তে যে সব দেবতার পূজা করে তাদের পক্ষে এদের কোন উপকার ও অপকার সাধন তো দূরের কথা বরং তারা মূলতঃ এ সব পূজারীদের ইবাদাত বিষয়ে সম্পূর্ণ উদাসীন।
৬. এরা দুনিয়াতে তাদের উপকার না করার পাশাপাশি তাদের হাশর ঘটানোর পর যারা তাদের ইবাদাত করতো তাদের শত্রæতে পরিণত হবে এবং তাদের সাথে সম্পর্কচ্ছেদ করবে। উপরন্তু তারা যে এদের ইবাদাত করতো এ ব্যাপারে তাদের অবগতিকেও তারা অস্বীকার করবে।
৭. যখন তাদের নিকট আমার রসূলের উপর অবতীর্ণ আয়াতসমূহ পাঠ করা হয় তখন কাফিররা আমার রাসূলের হাত মারফত তাদের নিকট আগত কুরআন সম্পর্কে বলে, এটি সুস্পষ্ট যাদু; যা আল্লাহর পক্ষ থেকে আগত ওহী নয়।
৮. এ সব মুশরিক কি বলতে চায় যে, মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) নিজে এই কুরআন গড়ে আল্লাহর প্রতি সম্বন্ধ করেছে?! হে রাসূল! আপনি এদেরকে বলুন: আমি যদি একে আমার পক্ষ থেকে গড়ে থাকি তবে কি আল্লাহ আমাকে শাস্তি দিতে চাইলে তোমরা তা থেকে আমাকে রক্ষা করতে পারবে? তাহলে আমি আল্লাহর উপর মিথ্যারোপ করে কীভাবে নিজেকে তাঁর শাস্তির সম্মুখীন করবো?! আল্লাহ ভালো জানেন, তোমরা তাঁর কুরআন ও আমাকে নিয়ে যে সব কূট মন্তব্য করে থাকো তিনিই আমার ও তোমাদের মধ্যকার সাক্ষী হিসাবে যথেষ্ট। তিনি তাঁর তাওবাকারী বান্দাদের প্রতি ক্ষমাশীল ও তাদের প্রতি অত্যন্ত দয়াপরবশ।
৯. হে রাসূল! আপনি নিজ নবুওয়াত অস্বীকারকারী এ সব মুশরিককে বলুন: আমি আল্লাহর প্রেরিত প্রথম রাসূল নই যে, তোমাদের উদ্দেশ্যে আমার দা’ওয়াতকে তোমরা আশ্চর্যের বিষয় মনে করবে। কেননা, আমার পূর্বে বহু রাসূল অতিবাহিত হয়েছেন। আর আমি আমার ও তোমাদের সাথে আল্লাহ দুনিয়াতে কী আচরণ করবেন তা জানি না। আমি তো কেবল আমার প্রতি আল্লাহর অবতীর্ণ ওহীর অনুসরণ করি। তাই আমি ওহীর বিপরীত না কিছু বলি, আর না কিছু করি। আমিতো একজন সতর্ককারী মাত্র। আমি আল্লাহর শাস্তি থেকে সুস্পষ্টভাবে সতর্ক করে থাকি।
১০. হে রাসূল! আপনি এ সব মিথ্যারোপকারীকে জিজ্ঞেস করুন, তোমরা বলো: যদি এই কুরআন আল্লাহর পক্ষ থেকে এসে থাকে আর তোমরা তা অস্বীকার করো। অথচ বনী ইসরাইলের এক সাক্ষ্য প্রদানকারী তাওরাতে এর ব্যাপারে যা এসেছে তার ভিত্তিতে ঈমান অনয়ন করে সাক্ষ্য দেয় যে, এটি আল্লাহর পক্ষ থেকে এসেছে। তোমরা ঈমানের ব্যাপারে অহঙ্কার প্রদর্শন করে থাকো। তবে কি তোমরা অনাচারী নও?! বস্তুতঃ আল্লাহ জালিম সম্প্রদায়কে হকের সন্ধান দেন না।
১১. কুরআন ও রাসূলের আনা বিষয়ে অবিশ্বাসীরা ঈমানদারদেরকে বলে: যদি মুহাম্মাদ যা নিয়ে আগমন করেছেন তা সত্য হতো; যা কল্যাণের প্রতি পথ দেখায় তাহলে এর প্রতি আমাদের পূর্বে ফকীর, দাস ও দুর্বলরা অগ্রণী হতে পারতো না। বস্তুতঃ তারা যেহেতু তাদের রাসূল তাদের নিকট যা নিয়ে আগমন করেছেন তা থেকে আলো গ্রহণ করে নি তাই অচিরেই তারা বলবে: তিনি আমার নিকট যা নিয়ে এসেছেন তা মিথ্যা ও পুরাতন বিষয়; আমরা এ মিথ্যার অনুসরণ করি না।
১২. এই কুরআনের পূর্বে আল্লাহ মূসার উপর তাওরাত অবতীর্ণ করেছেন। যা ছিলো সেই কিতাব যাকে হকের ব্যাপারে অনুসরণ করা হতো। আর যা ছিলো বনী ইসরাইলদের মধ্যে যারা এর অনুসরণ করেছে তাদের জন্য রহমত স্বরূপ। মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এর উপর অবতীর্ণ এই কুরআন এর পূর্বের কিতাবগুলোর সুস্পষ্ট আরবী ভাষায় সত্যায়নকারী। যাতে করে তিনি এর মাধ্যমে শিরক ও পাপাচার দ্বারা নিজেদের নফসের উপর জুলুমকারীদের সতর্ক করতে পারেন। বস্তুতঃ এটি মু’মিনদের জন্য সুসংবাদ; যারা তাদের ¯্রষ্টার সাথে সম্পর্ক সুন্দর রেখেছে এবং তাঁর সৃষ্টির সাথেও সম্পর্ক ভালো রেখেছে।
১৩. যারা বলে যে, আল্লাহ আমাদের রব। তিনি ব্যতীত আমাদের কোন রব নেই। অতঃপর তারা ঈমান ও নেক আমলের উপর প্রতিষ্ঠিত থাকলো তাদের জন্য পরকালে আগত কোন ভয় নেই। আর না তারা দুনিয়া হারানো কিংবা পিছনে রেখে আসা কোন বস্তুর উপর দুশ্চিন্তাগ্রস্ত হবে।
১৪. পূর্বের বৈশিষ্ট্যাবলী কর্তৃক গুণান্বিত ব্যক্তিরা হলো জান্নাতী। তারা তথায় চিরদিন থাকবে। এটি হলো দুনিয়ার জীবনে তাদের কৃতকর্মের ফল।
১৫. আমি মানুষকে গুরুত্ব সহকারে নির্দেশ দিয়েছি যে, সে যেন তার মাতা-পিতার প্রতি সদয় হয়। তাদের জীবদ্দশায় ও তারা মারা যাওয়ার পর শরীয়ত বিরোধী পন্থা ব্যতিরেকে তাদের সাথে যেন সদ্ব্যবহার করে। বিশেষতঃ তার মায়ের সাথে যে তাকে কষ্ট করে ধারণ করেছে ও কষ্ট করে প্রসব করেছে। তার গর্ভে অবস্থান ও দুধ ছাড়ানোর সময় ছিলো ত্রিশ মাস। অতঃপর যখন সে তার বিবেক ও শারীরিক শক্তির চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছে এবং চল্লিশ বৎসরে উপনীত হয় তখন যেন বলে, হে আমার প্রতিপালক! আপনি আমাকে আমার ও আমার মাতা-পিতার উপর প্রদত্ত নিআমতের শুকরিয়া আদায় করার তাওফীক দিন। আরো দিন আমাকে আপনার সন্তুষ্টির উপযুক্ত নেক আমলের তাওফীক। আর আপনি আমার পক্ষ থেকে তা কবুল করুন। আপনি আমার সন্তানদেরকে আমার জন্য সংশোধন করুন। আমি আপনার নিকট আমার পাপ থেকে তাওবা করছি। আর আমি আপনার আনুগত্যের জন্য নত শীর এবং আপনার নির্দেশ মান্যকারী।
১৬. এরা সে সব লোক যাদের নেক আমল আমি কবুল করে থাকি এবং মন্দ কাজগুলো মার্জনা করি। ফলে তদ্বারা তাদেরকে পাকড়াও করিনা। তারা জান্নাতবাসীদের অন্তর্ভুক্ত। তাদেরকে যে অঙ্গীকার প্রদান করা হলো তা সত্য; যা অবশ্যই বাস্তবে রূপ লাভ করবে।
১৭. আর যে ব্যক্তি স্বীয় মাতা-পিতাকে বলে, তোমাদের উভয়ের জন্য ধ্বংস। তোমরা কি আমাকে আমার মৃত্যুর পর কবর থেকে পুনরুত্থানের কথা বলছো। অথচ বহু শতাব্দীকাল অতিক্রম হয়েছে এবং তাতে যে সব মানুষ মৃত্যু বরণ করেছে তাদের কেউ জীবিত হয়ে ফিরে নি?! তাদের মাতা-পিতা আল্লাহর নিকট আর্তনাদ করে তাদের সন্তানের জন্য ঈমানের প্রতি হিদায়েতের দু‘আ করে এবং তাদের সন্তানকে বলে, তুমি পুনরুত্থানে ঈমান না আনলে ধ্বংস হয়ে যাবে। তাই এর উপর ঈমান আনয়ন করো। কেননা, পুনরুত্থানের ব্যাপারে আল্লাহর অঙ্গীকার সত্য; তাতে কোন সন্দেহ নেই। তখন সে তার পুনরুত্থানের প্রতি অবিশ্বাসকে নবায়নপূর্বক বলে, পুনরুত্থান সম্পর্কে যা কিছু বলা হলো তা মূলতঃ পূর্বেকারদের বই থেকে বলা হচ্ছে। এটি তাদের লিখনীর উদ্ধৃতি ব্যতীত আর কিছুই না। এটি মূলতঃ আল্লাহর পক্ষ থেকে সাব্যস্ত নয়।
১৮. এদের জন্য পূর্বেকার জিন ও মানব জাতির অনেকের মতো শাস্তি অবধারিত। তারা নিশ্চিত ক্ষতিগ্রস্ত। তারা জাহান্নামে প্রবেশের মাধ্যমে নিজেদের ক্ষতি সাধন করেছে।
১৯. আর জান্নাত ও জাহান্নামে উভয় দলের জন্যে তাদের আমল অনুযায়ী বহু স্তর রয়েছে। জান্নাতীদের জন্য রয়েছে উচ্চতর স্তরসমূহ। আর জাহান্নামীদের জন্য রয়েছে নি¤œতর স্তরসমূহ। আল্লাহ অবশ্যই কিয়ামত দিবসে তাদের আমলের পূর্ণমাত্রায় প্রতিদান দিবেন। তাদের কারো উপর পুণ্য কমিয়ে কিংবা পাপ বাড়িয়ে জুলুম করা হবে না।
২০. যে দিন আল্লাহকে অস্বীকারকারী ও তদীয় রাসূলদের প্রতি মিথ্যারোপকারীদেরকে আগুনের নিকট আনা হবে তাতে শাস্তি দেয়ার উদ্দেশ্যে এবং তাদেরকে ভীতি প্রদর্শন ও দোষারোপ স্বরূপ বলা হবে, তোমরা নিজেদের ভোগের অংশগুলো দুনিয়ার জীবনে শেষ করে ফেলেছো এবং তথায় বিদ্যমান সুখ ভোগ করে ফেলেছো। তাই আজকের দিনে দুনিয়ার জীবনে যমীনে অন্যায়ভাবে অহঙ্কার এবং কুফরী ও পাপের মাধ্যমে আল্লাহর আনুগত্য থেকে বেরিয়ে পড়ার ফলস্বরূপ তোমাদেরকে অপমানকর ও অপদস্তকারী শাস্তি আস্বাদন করানো হবে।
২১. হে রাসূল! আপনি বংশগতভাবে আদ সম্প্রদায়ের ভাই হুদের কথা উল্লেখ করুন। যখন সে তার জাতিকে তাদের উপর আল্লাহর গজব নিপতিত হওয়ার ভয় দেখিয়েছিলো তখন তারা আরব দ্বীপের দক্ষিণাঞ্চলের আঁকাবাঁকা বালুকারাশির উপর অবস্থিত তাদের বাড়ীগেুলোতে অবস্থানরত ছিলো।
২২. রাসূলগণ হুদের পূর্বে ও পরে স্বীয় সম্প্রদায়কে এ কথা বলে ভীতি প্রদর্শন করেছেন যে, তোমরা এক আল্লাহ ব্যতীত অন্য কারো ইবাদাত করো না। ফলে তাঁর সাথে অন্য কারো ইবাদাত করবে না। হে আমার সম্প্রদায়! আমি তোমাদের ব্যাপারে এক মহা দিবস তথা কিয়ামত দিবসের ভয় পচ্ছি।
২৩. তাঁর সম্প্রদায় তাঁকে বললো: তুমি কি আমাদেরকে আমাদের দেবতাদের থেকে বিমুখ করতে এসেছো? তোমার জন্য এটি আদৗ সম্ভব হবে না। আর যদি তোমার দাবিতে তুমি সত্য হয়ে থাকো তাহলে আমাদের উপর শাস্তি আপতিত করো।
২৪. যখন তাদের নিকট তাদের পক্ষ থেকে প্রস্তাবিত শাস্তি এসে পড়লো তখন তারা একে আসমানে দৃশ্যমান মেঘমালা স্বরূপ দেখতে পেলো; যা তাদের উপত্যকা অভিমুখী ছিলো। তখন তারা বললো, এই দৃশ্যমান বস্তু আমাদের উপর বৃষ্টি বর্ষাবে। হুদ তাদের উদ্দেশ্যে বললেন: তোমরা যে ধারণা করেছো যে, এটি এমন একটি মেঘমালা যা তোমাদের উপর বৃষ্টি বর্ষাবে, ব্যাপারটি কিন্তু তা নয়। বরং এটি সেই শাস্তি যে ব্যাপারে তোমরা তাড়াহুড়ো করেছিলে। এটি এমন এক বায়ু যাতে রয়েছে কষ্টদায়ক শাস্তি।
২৫. এটি যে বস্তুর উপর দিয়ে অতিক্রম করে সেগুলোর মধ্যে যেগুলোকে আল্লাহ ধ্বংস করতে নির্দেশ প্রদান করেন সেগুলোকে ধ্বংস করে ফেলে। ফলে তারা ধ্বংসপ্রাপ্ত হয়ে প্রভাত করে। তথায় তাদের অতীত অস্তিত্বের পরিচায়ক তাদের বসবাসের ঘরবাড়ীগুলো ব্যতীত অন্য কিছু অবশিষ্ট থাকে নি। বস্তুতঃ আমি এই কষ্টদায়ক শাস্তির মতো পাপের উপর গোঁড়ামী প্রদর্শনকারীদেরকে শাস্তি প্রদান করবো।
২৬. আমি হুদ সম্প্রদায়কে প্রতাপ-প্রতিপত্তির এমন সব উপকরণ প্রদান করেছি যা তোমারেকে প্রদান করি নি। আমি তাদেরকে শ্রবণের জন্য কান, দর্শনের জন্য চক্ষু এবং অনুধাবনের জন্য অন্তঃকরণ প্রদান করেছি। এতদসত্তে¡ও তাদের কর্ণ, চক্ষু ও বিবেক কোন উপকারে আসে নি। তথা আল্লাহর শাস্তি আগমনের পর তা তাদের জন্য প্রতিরক্ষার কোন কাজ দেয় নি। যেহেতু তারা আল্লাহর আয়াতসমূহ অস্বীকার করেছিলো। ফলে তাদেরকে নবী হুদ (অলাইহস-সালাম) যে শাস্তির ভয় দেখিয়েছিলেন; অথচ তারা একে অবিশ্বাস করেছিলো তা আপতিত হল।
২৭. হে মক্কাবাসী! আমি তোমাদের আশপাশের বসতিগুলোকে ধ্বংস করেছি তথা আদ, সামূদ, লুত সম্প্রদায় ও মাদয়ানবাসীকে। আর আমি তাদের উদ্দেশ্যে বিভিন্নরূপে দলীল প্রমাণাদি উপস্থাপন করেছি যেন তারা কুফরী থেকে ফেরত আসে।
২৮. তাদের মূর্তিগুলো কেন তাদের সাহায্যে এগিয়ে আসেনি যেগুলোর নৈকট্য লাভের উদ্দেশ্যে তারা পূজা ও বলি দিতো?! তাদেরকে আদৗ সাহায্য করেনি বরং তাদের থেকে সর্বাপেক্ষা অধিক প্রয়োজনের সময় দূরে সরে পড়েছে। বস্তুতঃ এটি হলো তাদের সেই মিথ্যা ও রটনার স্বরূপ যদ্বারা তারা নিজেদেরকে প্রবোধ দিতো এই বলে যে, এ সব মূর্তি তাদেরকে উপকার দিবে ও আল্লাহর নিকট সুপারিশ করবে।
২৯. হে রাসূল! সে সময়ের কথা স্মরণ করুন যখন আপনার প্রতি আমি এক দল জিন পাঠিয়েছিলাম। যারা আপনার উপর অবতীর্ণ কুরআন শ্রবণ করছিলো। তারা তা শ্রবণের জন্য উপস্থিত হলে পরস্পর বলতে থাকে, তোমরা চুপ থাকো। যেন আমরা তা শুনতে পাই। অতঃপর নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) তিলাওয়াত শেষ করলে তারা স্বীয় জাতির নিকট প্রত্যাবর্তন করলো এ দায়িত্ব নিয়ে যে, তারা যদি এই কুরআনের উপর ঈমান আনয়ন না করে তাহলে তাদের জন্য আল্লাহর শাস্তির ভয় রয়েছে।
৩০. তারা ওদেরকে বললো: হে আমাদের জাতি! আমরা এমন এক কুরআন শ্রবণ করেছি যা আল্লাহ মূসা (আলাইহিস-সালাম) এর পরে অবতীর্ণ করেছেন। যা আল্লাহর পক্ষ থেকে পূর্বে অবতীর্ণ কিতাবগুলোকে সত্যায়ন করে। আমরা যে কিতাব শ্রবণ করেছি তা সত্যের পথ প্রদর্শন করে এবং সরল পথ দেখায়। যা হলো ইসলামের পথ।
৩১. হে আমাদের সম্প্রদায়! তোমাদেরকে মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) যে সত্যের প্রতি আহŸান জানিয়েছেন তার অনুসরণ করো এবং তিনি স্বীয় প্রতিপালকের পক্ষ থেকে প্রেরিত নবী হিসাবে তাঁর উপর ঈমান আনয়ন করো। তাহলে তিনি তোমাদের পাপসমূহ মার্জনা করবেন এবং তোমাদেরকে তাঁর পক্ষ থেকে সত্যের প্রতি ডাকে সাড়া না দেয়া উপরন্তু তিনি যে স্বীয় রবের প্রেরিত রাসূল সে কথার উপর ঈমান না আনার দরুন তোমাদের উদ্দেশ্যে অপেক্ষমাণ কষ্টদায়ক শাস্তি থেকে রেহাই দিবেন।
৩২. যে ব্যক্তি মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর পক্ষ থেকে তাঁর সত্যের আহŸান গ্রহণ করবে না সে যমীনে আল্লাহ থেকে পালিয়ে থাকতে পারবে না। আর না তার জন্য আল্লাহ ব্যতীত এমন কোন বন্ধুবান্ধব রয়েছে যারা তাকে তাঁর শাস্তি থেকে রেহাই দিতে পারে। বরং তারা হলো সত্য থেকে সুস্পষ্ট ভ্রষ্টতায় নিমজ্জিত।
৩৩. পুনরুত্থান অস্বীকারকারী এ সব মুশরিক কি দেখে না যে, যে আল্লাহ এতো বিশাল ও বিস্তীর্ণ আসমান ও যমীনকে অনায়াসে সৃষ্টি করেছেন তিনি কি হিসাব ও প্রতিদানের উদ্দেশ্যে মৃতদেরকে জীবিত করতে সক্ষম নন? হ্যাঁ, অবশ্যই তিনি তাদেরকে জীবিত করতে সক্ষম। তিনি মহিয়ান ও সর্ব বিষয়ে সক্ষম। ফলে তিনি মৃতদেরকে জীবিত করতে অপারগ নন।
৩৪. যে দিন আল্লাহ ও তদীয় রাসূলদের প্রতি অবিশ্বাসকারীদেরকে শাস্তি প্রদানের উদ্দেশ্যে আগুনের সম্মুখে উপনীত করা হবে এবং তাদের উদ্দেশ্যে ধমকের স্বরে বলা হবে, তোমরা যে শাস্তি দেখতে পাচ্ছো তা কি সত্য নয়?! না কি তোমরা যেমনটি দুনিয়াতে বলতে তা সেরূপ মিথ্যা?! তদুত্তরে তারা বলবে, অবশ্যই হে আমাদের রব! এটি সত্য। তখন তাদেরকে বলা হবে, তাহলে আল্লাহকে অবিশ্বাসের ফলে তোমরা শাস্তি ভোগ করো।
৩৫. হে রাসূল! আপনি নিজ জাতি কর্তৃক আপনাকে অবিশ্বাস করার উপর ধৈর্য ধারণ করুন। যেমনটি দৃঢ়প্রত্যয়ী রাসূলগণ করেছিলেন। তথা নূহ, ইবরাহীম, মূসা ও ঈসা (আলাইহিমুস-সালাম)। তাদের শাস্তির জন্য তাড়াহুড়ো করবেন না। কেননা, তাদের শাস্তির মেয়াদ এতো দীর্ঘ হবে যে, আপনার জাতির মিথ্যারোপকারীরা মনে করবে, দুনিয়াতে তারা কেবল এক মুহূর্ত অবস্থান করেছিলো। বস্তুতঃ মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এর উপর অবতীর্ণ এই কুরআন মানব ও দানবের জন্য বার্তা ও যথেষ্ট বাণী। বস্তুতঃ শাস্তি দিয়ে যাদেরকে ধ্বংস করা হবে তারা নিশ্চিতভাবে কুফরী ও পাপাচারের মাধ্যমে আল্লাহর আনুগত্য থেকে বহির্গমনকারী।
سورة الأحقاف
معلومات السورة
الكتب
الفتاوى
الأقوال
التفسيرات

سورة (الأحقاف) من السُّوَر المكية، وقد افتُتحت بدعوة هذا الكتابِ إلى التوحيد والإيمان بالله عز وجل: المتصِفِ بصفات الكمال، المستحِقِّ للعبودية، واشتملت على مقصدٍ عظيم؛ وهو: إنذارُ الكفار؛ بتذكيرهم بقصةِ (عادٍ)، وما أنزَل اللهُ بهم من عذاب في (الأحقاف)، وفي ذلك دلالةٌ وآية واضحة على قدرة الله على البعث وحساب الناس.

ترتيبها المصحفي
46
نوعها
مكية
ألفاظها
645
ترتيب نزولها
66
العد المدني الأول
34
العد المدني الأخير
34
العد البصري
34
العد الكوفي
35
العد الشامي
34

* قوله تعالى: {قُلْ أَرَءَيْتُمْ إِن كَانَ مِنْ عِندِ اْللَّهِ وَكَفَرْتُم بِهِۦ وَشَهِدَ شَاهِدٞ مِّنۢ بَنِيٓ إِسْرَٰٓءِيلَ عَلَىٰ مِثْلِهِۦ فَـَٔامَنَ وَاْسْتَكْبَرْتُمْۚ إِنَّ اْللَّهَ لَا يَهْدِي اْلْقَوْمَ اْلظَّٰلِمِينَ} [الأحقاف: 10]:

عن عوفِ بن مالكٍ الأشجَعيِّ رضي الله عنه، قال: «انطلَقَ النبيُّ صلى الله عليه وسلم وأنا معه حتى دخَلْنا كنيسةَ اليهودِ يومَ عيدِهم، فكَرِهوا دخولَنا عليهم، فقال لهم رسولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم: «يا معشرَ اليهودِ، أَرُوني اثنَيْ عشَرَ رجُلًا منكم، يَشهَدون أنْ لا إلهَ إلا اللهُ وأنَّ مُحمَّدًا رسولُ اللهِ؛ يُحبِطِ اللهُ عن كلِّ يهوديٍّ تحتَ أديمِ السماءِ الغضَبَ الذي عليه»، قال: فأَسْكَتُوا ما أجابه منهم أحدٌ، ثم رَدَّ عليهم فلم يُجِبْهُ أحدٌ، ثم ثلَّثَ فلم يُجِبْهُ أحدٌ، فقال: «أبَيْتم؛ فواللهِ، إنِّي لأنا الحاشرُ، وأنا العاقبُ، وأنا النبيُّ المصطفى، آمَنْتم أو كذَّبْتم»، ثم انصرَفَ وأنا معه، حتى إذا كِدْنا أن نخرُجَ، نادى رجُلٌ مِن خَلْفِنا، فقال: كما أنتَ يا مُحمَّدُ، قال: فأقبَلَ، فقال ذلك الرجُلُ: أيَّ رجُلٍ تَعلَموني فيكم يا معشرَ اليهودِ؟ قالوا: واللهِ، ما نَعلَمُ أنَّه كان فينا رجُلٌ أعلَمَ بكتابِ اللهِ منك، ولا أفقَهَ منك، ولا مِن أبيك قَبْلَك، ولا مِن جَدِّكَ قَبْلَ أبيك، قال: فإنِّي أشهَدُ أنَّه نبيُّ اللهِ الذي تَجِدُونه في التَّوْراةِ، قالوا: كذَبْتَ، ثم رَدُّوا عليه وقالوا فيه شرًّا، قال رسولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم: «كذَبْتُم؛ لن يُقبَلَ قولُكم، أمَّا آنفًا فتُثْنُون عليه مِن الخيرِ ما أثنَيْتم، ولمَّا آمَنَ أكذَبْتموه، وقُلْتم فيه ما قُلْتم؛ فلن يُقبَلَ قولُكم»، قال: فخرَجْنا ونحن ثلاثةٌ: رسولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم، وأنا، وعبدُ اللهِ بنُ سَلَامٍ، وأنزَلَ اللهُ عز وجل فيه: {قُلْ أَرَءَيْتُمْ إِن كَانَ مِنْ عِندِ اْللَّهِ وَكَفَرْتُم بِهِۦ وَشَهِدَ شَاهِدٞ مِّنۢ بَنِيٓ إِسْرَٰٓءِيلَ عَلَىٰ مِثْلِهِۦ فَـَٔامَنَ وَاْسْتَكْبَرْتُمْۚ إِنَّ اْللَّهَ لَا يَهْدِي اْلْقَوْمَ اْلظَّٰلِمِينَ} [الأحقاف: 10]». أخرجه أحمد (23984).

* قوله تعالى: {وَإِذْ صَرَفْنَآ إِلَيْكَ نَفَرٗا مِّنَ اْلْجِنِّ يَسْتَمِعُونَ اْلْقُرْءَانَ فَلَمَّا حَضَرُوهُ قَالُوٓاْ أَنصِتُواْۖ فَلَمَّا قُضِيَ وَلَّوْاْ إِلَىٰ قَوْمِهِم مُّنذِرِينَ} [الأحقاف: 29]:

عن عبدِ اللهِ بن مسعودٍ رضي الله عنه، قال: «هبَطوا على النبيِّ صلى الله عليه وسلم وهو يَقرأُ القرآنَ ببطنِ نَخْلةَ، فلمَّا سَمِعوه، قالوا: أنصِتوا، قال: صَهْ، وكانوا تسعةً، أحدُهم زَوْبعةُ؛ فأنزَلَ اللهُ عز وجل: {وَإِذْ صَرَفْنَآ إِلَيْكَ نَفَرٗا مِّنَ اْلْجِنِّ يَسْتَمِعُونَ اْلْقُرْءَانَ فَلَمَّا حَضَرُوهُ قَالُوٓاْ أَنصِتُواْۖ فَلَمَّا قُضِيَ وَلَّوْاْ إِلَىٰ قَوْمِهِم مُّنذِرِينَ} [الأحقاف: 29]». أخرجه ابن أبي شيبة؛ كما في "تفسير القرآن العظيم" (4 /176).

* سورة (الأحقاف):

سُمِّيت سورة (الأحقاف) بهذا الاسمِ؛ لذِكْرِ (الأحقاف) فيها؛ كما في قوله تعالى: {وَاْذْكُرْ أَخَا عَادٍ إِذْ أَنذَرَ قَوْمَهُۥ بِاْلْأَحْقَافِ وَقَدْ خَلَتِ اْلنُّذُرُ مِنۢ بَيْنِ يَدَيْهِ وَمِنْ خَلْفِهِۦٓ أَلَّا تَعْبُدُوٓاْ إِلَّا اْللَّهَ إِنِّيٓ أَخَافُ عَلَيْكُمْ عَذَابَ يَوْمٍ عَظِيمٖ} [الأحقاف: 21].
و(الأحقافُ): هي مَسكَنُ (عادٍ) الذين أهلكهم اللهُ.

1. القرآن حقٌّ من عند الله تعالى يدعو للتوحيد (١-١٤).

2. الفِطْرة في استقامتها وانحرافها (١٥-٢٠).

3. خسران المكذبين عِبْرةٌ لمن يعتبر (٢١-٢٨).

4. الرسول مُصدَّقٌ من عند الثَّقَلين (٢٩-٣٥).

ينظر: "التفسير الموضوعي لسور القرآن الكريم" لمجموعة من العلماء (7 /179).

مقصدُ هذه السورة هو إنذارُ الكافرين بعذابِ الله قومَ هُودٍ عليه السلام بـ(الأحقاف)، وفي ذلك دلالةٌ واضحة على صدقِ الوعد في قيام الساعة؛ فالله لا يُخلِف وعدَه، وفي هذا دعوةٌ لهم إلى توحيد الله، والاستجابةِ لأمره، وأخذِ العِبْرة من عذاب الله العزيز الحكيم لقومِ هُودٍ عليه السلام.

ينظر: "مصاعد النظر للإشراف على مقاصد السور" (2 /481).