ترجمة سورة الحشر

الترجمة البنغالية للمختصر في تفسير القرآن الكريم

ترجمة معاني سورة الحشر باللغة البنغالية من كتاب الترجمة البنغالية للمختصر في تفسير القرآن الكريم.

১. আসমান ও যমীনের সকল সৃষ্টি আল্লাহর সাথে যা কিছু বেমানান তা থেকে তাঁকে মহান ও পবিত্র বলে ঘোষণা দিয়েছে। তিনি পরাক্রমশালী; যাঁকে কেউ পরাস্ত করতে পারে না। তিনি তাঁর সৃষ্টি, বিধান ও ফায়সালায় প্রজ্ঞাময়।
২. যে বনু নযীর আল্লাহকে অস্বীকার করেছে ও তাঁর রাসূল মোহাম্মদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এর প্রতি মিথ্যারোপ করেছে তিনি তাদেরকে প্রথমবারের মতো মদীনা থেকে সিরিয়ার দিকে বহিষ্কার করেছেন। তারা হলো তাওরাতের অনুসারী এক ইহুদি সম্প্রদায়। তারা যখন নিজেদের চুক্তি ভঙ্গ করলো এবং নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এর বিপরীতে মুশরিকদের সাথে সঙ্গ দিলো। তিনি তাদেরকে সিরিয়া এলাকার দিকে বহিষ্কার করলেন। হে মুমিনরা! তোমরা ধারণা করো নি যে, তাদের এ সম্মান ও ক্ষমতা থাকা সত্তে¡ও তারা নিজেদের ঘর বাড়ী ছেড়ে চলে যাবে। তারা ধারণা করেছিলো যে, তাদের কর্তৃক নির্মিত সুদৃঢ় দূর্গগুলো তাদেরকে আল্লাহর পাকড়াও এবং তাঁর শাস্তি থেকে রক্ষা করবে। ফলে রাসূলকে উদ্দেশ্য করে তাদের সাথে যুদ্ধ করা ও তাদেরকে নিজেদের ঘর থেকে বহিষ্কার করার ব্যাপারে আল্লাহর নির্দেশের ফলশ্রæতিতে তাদের নিকট আল্লাহর পাকড়াও এমন সময় এসে পড়লো যখন তারা চিন্তাও করতে পারে নি। আল্লাহ তাদের অন্তরে এমন ভীষণ ভয় প্রবিষ্ট করলেন যে, মুসলমানরা যাতে তাদের ঘর বাড়ী দ্বারা উপকৃত না হতে পারে সেজন্য তারা নিজেদের হাতে ভিতর থেকে ঘরগুলো ভাঙ্গা শুরু করলো আর অপর দিকে মুসলমানরা সেগুলোকে বাহির থেকে ভাঙতে লাগলো। হে বিবেকবানরা! তোমরা কুফরির দরুন তাদের উপর পতিত শাস্তি থেকে উপদেশ গ্রহণ করো। যাতে তোমরাও তাদের মতো না হও। যার ফলশ্রæতিতে তাদের মতো তোমাদেরকেও প্রতিফল পেতে হয়।
৩. যদি আল্লাহ তাদের উপর নিজেদের ঘর থেকে বেরিয়ে পড়ার কথা অবধারিত না করতেন তাহলে তিনি তাদেরকে দুনিয়াতে হত্যা ও বন্দী করার মাধ্যমে শাস্তি প্রদান করতেন যেমন তাদের ভাই বনু কুরাইযার সাথে করেছিলেন। তাদের জন্য পরকালে রয়েছে জাহান্নামের শাস্তি। তথায় তারা চিরদিন অবস্থান করবে।
৪. তাদের ভাগ্যে যা জুটলো তা এ জন্য যে, তারা নিজেদের কুফরী ও অঙ্গীকার ভঙ্গ কারার মাধ্যমে আল্লাহ ও তদীয় রাসূলের সাথে শত্রæতা করেছে। বস্তুতঃ যে ব্যক্তি আল্লাহর সাথে শত্রæতা পোষণ করে সে জেনে রাখুক, আল্লাহ কঠিন শাস্তির অধিকারী। তাই সে তাঁর কঠিন শাস্তির ভাগী হবে।
৫. হে মুমিনরা! তোমরা বনু নযীর যুদ্ধে আল্লাহর শত্রæদেরকে রাগান্বিত করার জন্য যে খেজুর বৃক্ষ কেটে ফেলেছো কিংবা তা থেকে উপকৃত হওয়ার জন্য যাকে তার শেকড়ের উপর দÐায়মান অবস্থায় রেখে দিয়েছো তা সবই আল্লাহর নির্দেশে। এটি তাদের ধারণা অনুযায়ী যমীনে ফাসাদ সৃষ্টির উদ্দেশ্যে নয়। যেন আল্লাহ তাঁর আনুগত্য থেকে বেরিয়ে পড়া, অঙ্গীকার ভঙ্গকারী ও বিশ্বস্ততার পথ পরিহার করে প্রতারণার পথ অবলম্বনকারী ইহুদিদেরকে অপমান করেন।
৬. আল্লাহ তাঁর রাসূলের প্রতি বনু নযীরের যে সম্পদ ফেরত দিয়েছেন যার উদ্দেশ্যে তোমরা আরোহণের ঘোড়া কিংবা উট দৌড়াও নি এবং তাতে তোমাদের কোন কষ্টও করতে হয়নি। বরং আল্লাহ তাঁর রাসূলগণকে যার উপর ইচ্ছা বিজয়ী করেন। তাই তিনি তাঁর রাসূলকে বনু নযীরের উপর বিজয়ী করেছেন। ফলে তাদের অঞ্চলকে বিনা যুদ্ধে তিনি জয় করেন। বস্তুতঃ আল্লাহ সর্ব বিষয়ে সক্ষম। তাঁকে কোন বস্তুই আপারগ করতে পারে না।
৭. আল্লাহ কোনরূপ যুদ্ধ ব্যতিরেকে গ্রামবাসীর যে সম্পদ দ্বারা তদীয় রাসূলের উপর অনুগ্রহ করেছেন তা আল্লাহর। তিনি যার জন্য ইচ্ছা নির্ধারণ করতে পারেন। তা হলো রাসূল এবং তাঁর নিকটাত্মীয় বনু হাশিম ও বনু আব্দিল মুত্তালিবের মালিকানাধীন। তাদের জন্য এটি তাদের সাদাকা থেকে বঞ্চিত থাকার বদলা স্বরূপ। তেমনিভাবে তা হলো এতীম, দরিদ্র ও যে পথিকের সম্বল নিঃশেষিত হয়ে গিয়েছে তাদের জন্য। যাতে করে সম্পদ দরিদ্রদেরকে বাদ রেখে শুধু ধনীদের মাঝে আদান প্রদান না হয়। হে মু’মিন সম্প্রদায়! রাসূল তোমাদেরকে বিনা যুদ্ধে লব্ধ সম্পদ থেকে যা প্রদান করেন তা গ্রহণ করো এবং তিনি যা থেকে বারণ করেন তা থেকে বিরত থাকো। আর তোমরা আল্লাহর আদেশ-নিষেধ মান্য করার মাধ্যমে তাঁকে ভয় করো। নিশ্চয়ই আল্লাহ কঠিন শাস্তিদাতা। তাই তোমরা তাঁর শাস্তিকে ভয় করো।
৮. আর এ সম্পদের কিছু অংশ আল্লাহর পথের ওই সকল দরিদ্র মুহাজিরদের জন্য ব্যয় করা হবে যাদেরকে তাদের সম্পদ ও সন্তান পরিহার করতে বাধ্য করা হয়েছে। তারা আশা রাখে যে, আল্লাহ তাদের উপর দুনিয়াতে জীবিকার মাধ্যমে আর পরকালে সন্তুষ্টির মাধ্যমে অনুগ্রহ করবেন। তারা আল্লাহ ও তদীয় রাসূলকে আল্লাহর পথে জিহাদের মাধ্যমে সাহায্য করে। উপরোক্ত বৈশিষ্ট্যে গুণান্বিত ব্যক্তিরাই প্রকৃতপক্ষে দৃঢ় ঈমানদার।
৯. যে সব আনসারী মুহাজিরদের পূর্বে মদীনায় অবতরণ করেছে এবং আল্লাহ ও তদীয় রাসূলের উপর ঈমান আনয়নকে পছন্দ করেছে তারা তাদের নিকট মক্কা থেকে আসা হিজরতকারীদেরকে ভালো বাসে। আল্লাহর পথে হিজরতকারীরা বিনা যুদ্ধে লব্ধ সম্পদ থেকে এমন কিছু লাভ করলে তারা কোনরূপ হিংসা-বিদ্বেষ রাখে না যা তারা পায় নি। বরং তারা পার্থিব বিষয়ে মুহাজিরদেরকে তাদের নিজেদের উপর প্রাধান্য দেয়। যদিও বা তারা দারিদ্র ও অভাবগ্রস্ত। বস্তুতঃ আল্লাহ যাকে সম্পদের প্রতি অন্তরের লোভ থেকে রেহাই দিয়েছেন ফলে সে তা তাঁর পথে ব্যয় করে তারাই নিজেদের আশার বস্তু লাভ ও ভয়ের বস্তু থেকে মুক্তি প্রাপ্তির মাধ্যমে সফলকাম।
১০. যারা তাদের পরবর্তীতে এসেছে এবং সুন্দরভাবে তাদের পদাঙ্ক অনুসরণ করেছে আর কিয়ামত পর্যন্ত এ ধারা চালু থাকবে তারা বলে: হে আমাদের প্রতিপালক! আপনি আমাদেরকে ও আমাদের পূর্বে যারা আল্লাহ ও তদীয় রাসূলের উপর ঈমান আনয়ন করেছে তাদেরকে ক্ষমা করুন। আর আমাদের অন্তরে মুমিনদের ব্যাপারে কোনরূপ ক্ষোভ কিংবা বিদ্বেষ রেখো না। হে আমাদের প্রতিপালক! আপনি অবশ্যই দয়াময় ও স্নেহশীল।
১১. হে রাসূল! আপনি কি তাদেরকে দেখেন নি যারা কুফরীকে লুকিয়ে রেখে ঈমান প্রকাশ করে। তারা বিকৃত বাইবেলের অনুসারী নিজেদের ইহুদি কাফির ভাইদেরকে বলে, তোমরা নিজেদের ঘরে অবস্থান করো। আমরা আদৗ তোমাদের অসহযোগিতা করবো না। আর না তোমাদেরকে কারো নিকট সমর্পণ করবো। যদি মুসলমানরা তোমাদেরকে সেখান থেকে বের করে দেয় তাহলে আমরাও তোমাদের সাথে জোটবদ্ধভাবে বেরিয়ে পড়বো। আমরা এমন কারো আনুগত্য করবো না যে আমাদেরকে তোমাদের সাথে বের হতে বারণ করবে। যদি তারা তোমাদের সাথে যুদ্ধ করে তাহলে আমরা তোমাদেরকে তাদের বিরুদ্ধে সহযোগিতা করবো। আল্লাহ সাক্ষী রয়েছেন যে, মুনাফিকরা ইহুদিদেরকে বের করে দিলে তারাও বের হবে এবং তাদের বিরুদ্ধে মুসলমানরা যুদ্ধ লড়লে তারাও ওদের সঙ্গে লড়বে এমন দাবিতে নির্ঘাত মিথ্যবাদী।
১২. বস্তুতঃ মুসলমানরা ইহুদিদেরকে বের করে দিলে তারা ওদের সাথে বের হবে না এবং মুসলমানরা তাদের সাথে যুদ্ধ করলে তারা ওদেরকে সাহায্য-সহযোগিতা করবে না। আর যদিও তাদেরকে মুসলমানদের বিরুদ্ধে সাহায্য করে তবুও তারা ওদেরকে ছেড়ে পালিয়ে যাবে। অতঃপর আর মুনাফিকদেরকে সাহায্য করা হবে না বরং আল্লাহ তাদেরকে অপমান ও অপদস্ত করবেন।
১৩. হে মুমিনরা! তোমরা মুনাফিক ও ইহুদিদের অন্তরে আল্লাহ অপেক্ষা আরো বেশী ভয়ের কারণ। উপরোল্লিখিত বিষয় তথা তোমাদের ব্যাপারে তাদের প্রচÐ ভয় এবং আল্লাহর ব্যাপারে তাদের হালকা ভয়ের কারণ হলো তারা মূলতঃ নির্বোধ ও অবুঝ জাতি। কেননা, তারা যদি বুঝতো তাহলে অবশ্যই এ কথা জানতো যে, আল্লাহ ভয়ের অধিক হকদার। যেহেতু তিনিই তোমাদেরকে তাদের উপর বিজয়ী করেছেন।
১৪. হে মুমিনরা! তোমাদের সাথে ইহুদিরা একজোট হয়ে যুদ্ধ করলে কেবল চৌহদ্দি দ্বারা ঘেরা পাড়া কিংবা প্রাচীরের আড়াল থেকেই যুদ্ধ করবে। কেননা, তারা নিজেদের কাপুরুষতার ফলে তোমাদের মোকাবেলা করতে অক্ষম। তাদের পরস্পরের শত্রæতার ফলে তাদের মধ্যকার দ্ব›দ্ব অতি প্রকট। যদিও বা আপনি ধারণা করেন যে, তাদের কথা ও দল এক। কিন্তু বাস্তবতা হলো এই যে, তাদের অন্তর ভিন্ন ও বিভক্ত। এ অনৈক্য ও শত্রæতা এ জন্য যে, তারা বস্তুতঃ বিবেকহীন। কেননা, যদি তারা বুঝতো তাহলে সত্যকে চিনে এর অনুসরণ করতো এবং তাতে তারা মতানৈক্য করতো না।
১৫. কুফরী ও শাস্তির ক্ষেত্রে এ সব ইহুদির উদাহরণ হলো কিছু কাল পূর্বেকার মক্কার মুশরিকদের ন্যায়। তারা নিজেদের কুফরীর নিকৃষ্টতম প্রতিফল আস্বাদন করেছে। ফলে বদর দিবসে তাদের মধ্যকার কাউকে হত্যা করা হয়েছে আবার কাউকে বন্দী করা হয়েছে। উপরন্তু তাদের জন্য পরকালে রয়েছে কঠিন শাস্তি।
১৬. মুনাফিকদের কথা শ্রবণ করার ক্ষেত্রে তাদের উদাহরণ হলো শয়তানের ন্যায়। যে মানুষের মাঝে কুফরীর কাজে আকর্ষণ সৃষ্টি করেছে। অতঃপর যখন সে তার প্ররোচনায় কুফরী করে বসলো তখন সে বলে উঠলো, আমি তোমার কুফরী আচরণ থেকে দায়মুক্ত। আমি সৃষ্টিকুলের প্রতিপালককে ভয় করি।
১৭. ফলে শয়তান ও তার অনুসারীর শেষ পরিণতি এ হলো যে, অনুসরণীয় শয়তান ও তার অনুসারী মানুষ উভয়ে কিয়ামত দিবসে আগুনে থাকবে। তারা তথায় চিরকাল অবস্থান করবে। বস্তুতঃ তাদের এ প্রতীক্ষিত শাস্তি হলো ওই সকল জালিমের শাস্তি যারা আল্লাহর সীমালঙ্ঘনপূর্বক নিজেদের উপর অবিচার করেছে।
১৮. হে মুমিন সম্প্রদায়! তোমরা যারা আল্লাহর উপর ঈমান আনয়ন করেছো ও তাঁর প্রবর্তিত বিধান অনুযায়ী আমল করে থাকো তোমরা তাঁর আদেশ-নিষেধ মান্য করার মাধ্যমে তাঁকে ভয় করো এবং প্রতিটি ব্যক্তি যেন চিন্তা করে যে, কিয়ামত দিবসের উদ্দেশ্যে সে কী নেক আমল আগে প্রেরণ করেছে। তোমরা আল্লাহকে ভয় করো। আল্লাহ অবশ্যই তোমাদের আমল সম্পর্কে পরিজ্ঞাত। তাঁর নিকট তোমাদের কোন আমলই গোপন নয়। তাই তিনি অচিরেই এর প্রতিদান দিবেন।
১৯. তোমরা ওদের মতো হয়ো না যারা আল্লাহকে তাঁর আদেশ-নিষেধ পরিহার করার মাধ্যমে ভুলে গিয়েছে। ফলে আল্লাহ তাদেরকে তাদের নিজেদের কথাই ভুলিয়ে দিয়েছেন। তাই যে সব আমল তাদেরকে আল্লাহর গযব ও শাস্তি থেকে রক্ষা করবে সেগুলো তারা করে নি। বস্তুতঃ যারা আল্লাহকে ভুলে গিয়ে তাঁর নির্দেশ বাস্তবায়ন করে নি আর না তাঁর নিষিদ্ধ বিষয়াদি থেকে বিরত থেকেছে মূলতঃ তারা আল্লাহর আনুগত্যের বাইরে।
২০. জান্নাতী ও জাহান্নামী সমান হতে পারে না। বরং তারা যেমন দুনিয়াতে আমলের দিক থেকে ভিন্ন ছিলো ঠিক তেমনিভাবে তারা পরকালের প্রতিদানেও ভিন্ন হবে। বস্তুতঃ জান্নাতীরা নিজের স্বপ্ন পূরণে এবং ভয়ের বিষয় থেকে রক্ষা পাওয়ার মাধ্যমে সফল হবে।
২১. হে রাসূল! আমি যদি এ কুরআন পাহাড়ের উপর অবতীর্ণ করতাম তাহলে আপনি দেখতেন যে, কুরআনে বিদ্যমান কঠোর সাবধানমূলক উপদেশ এবং কঠিন শাস্তির ফলে তা প্রচÐ শক্ত হওয়া সত্তে¡ও আল্লাহর ভয়ে ভীত ও চুরমার হয়ে গিয়েছে। বস্তুতঃ আমি এ সব উপদেশ এ জন্য দিয়ে থাকি যাতে করে তারা বিবেককে কাজে লাগিয়ে উপদেশমূলক আয়াতগুলো থেকে উপকৃত হয়।
২২-২৩. তিনিই সেই আল্লাহ যিনি ব্যতীত অন্য কোন প্রকৃত মাবূদ নেই। তিনি অনুপস্থিত-উপস্থিত সব কিছুর জ্ঞান রাখেন। তাঁর নিকট এ সবের কোন কিছুই গোপন থাকে না। তিনি ইহকাল ও পরকালের পরম করুণাময় ও অতি দয়ালু। তাঁর রহমত জগতবাসীকে পরিব্যাপ্ত করেছে। তিনি অধিপতি, পবিত্র এবং সব ধরনের ত্রæটি ও দোষ থেকে মুক্ত। নিজ রাসূলগণকে সুস্পষ্ট নিদর্শনাবলী দ্বারা সত্যায়নকারী। নিজ বান্দাদের আমলসমূহের পর্যবেক্ষক। এমন পরাক্রমশালী যাকে পরাস্তকারী কেউ নেই। এমন প্রতাপশালী যিনি নিজ প্রতাপ দিয়ে সকল বস্তুকে করতলগত করে রেখেছেন। তিনি অহঙ্কারী। বস্তুতঃ মুশরিকরা আল্লাহর সাথে যে সব দেবতা প্রভৃতিকে শরীক করে তিনি তা থেকে মুক্ত ও পবিত্র।
২২-২৩. তিনিই সেই আল্লাহ যিনি ব্যতীত অন্য কোন প্রকৃত মাবূদ নেই। তিনি অনুপস্থিত-উপস্থিত সব কিছুর জ্ঞান রাখেন। তাঁর নিকট এ সবের কোন কিছুই গোপন থাকে না। তিনি ইহকাল ও পরকালের পরম করুণাময় ও অতি দয়ালু। তাঁর রহমত জগতবাসীকে পরিব্যাপ্ত করেছে। তিনি অধিপতি, পবিত্র এবং সব ধরনের ত্রæটি ও দোষ থেকে মুক্ত। নিজ রাসূলগণকে সুস্পষ্ট নিদর্শনাবলী দ্বারা সত্যায়নকারী। নিজ বান্দাদের আমলসমূহের পর্যবেক্ষক। এমন পরাক্রমশালী যাকে পরাস্তকারী কেউ নেই। এমন প্রতাপশালী যিনি নিজ প্রতাপ দিয়ে সকল বস্তুকে করতলগত করে রেখেছেন। তিনি অহঙ্কারী। বস্তুতঃ মুশরিকরা আল্লাহর সাথে যে সব দেবতা প্রভৃতিকে শরীক করে তিনি তা থেকে মুক্ত ও পবিত্র।
২৪. তিনিই সেই আল্লাহ যিনি সব কিছুর ¯্রষ্টা, সর্ব প্রকার বস্তুর উদ্ভাবক। তাঁর ইচ্ছানুযায়ী স্বীয় সৃষ্টিকে রূপদানকারী। তাঁর রয়েছে উচ্চতর গুণাবলীর উপর পরিব্যাপ্ত নামসমূহ। তাঁকে আসমান ও যমীনের সবাই সর্ব প্রকার ত্রæটি থেকে মুক্ত ঘোষণা করে। তিনি পরাক্রমশালী। তাঁকে কোন কিছুই পরাস্ত করতে পারে না। তিনি নিজ সৃষ্টি, ফায়সালা ও বিধানে প্রজ্ঞাবান।
سورة الحشر
معلومات السورة
الكتب
الفتاوى
الأقوال
التفسيرات

سورة (الحشر) من السُّوَر المدنية، من (المسبِّحات)، وهي التي تبدأ بـ {سَبَّحَ}، نزلت بعد سورة (البيِّنة)، وقد نزلت في إجلاء يهودِ (بني النَّضير)، وأشارت إلى تاريخِ اليهود المليء بالخيانات، وعدم الالتزام بالمواثيق والعهود، وتعرَّضت لحُكْمِ (الفَيْء)، وقد افتُتحت بمقصدٍ عظيم؛ وهو تنزيهُ الله عزَّ وجلَّ عن كل نقص، وإثبات كلِّ كمال له سبحانه؛ فهو المستحِقُّ لصفات الألوهيَّة والربوبيَّة.

ترتيبها المصحفي
59
نوعها
مدنية
ألفاظها
447
ترتيب نزولها
101
العد المدني الأول
24
العد المدني الأخير
24
العد البصري
24
العد الكوفي
24
العد الشامي
24

* نزَلتْ سورة (الحشر) في يهودِ (بني النَّضير):

عن سعيدِ بن جُبَيرٍ رحمه الله، قال: «قلتُ لابنِ عباسٍ: سورةُ التَّوْبةِ؟ قال: التَّوْبةُ هي الفاضحةُ، ما زالت تَنزِلُ: {وَمِنْهُمْ} {وَمِنْهُمْ} حتى ظَنُّوا أنَّها لن تُبقِيَ أحدًا منهم إلا ذُكِرَ فيها، قال: قلتُ: سورةُ الأنفالِ؟ قال: نزَلتْ في بَدْرٍ، قال: قلتُ: سورةُ الحَشْرِ؟ قال: نزَلتْ في بني النَّضِيرِ». أخرجه البخاري (٤٨٨٢).

* قوله تعالى: {سَبَّحَ لِلَّهِ مَا فِي اْلسَّمَٰوَٰتِ وَمَا فِي اْلْأَرْضِۖ وَهُوَ اْلْعَزِيزُ اْلْحَكِيمُ ١ هُوَ اْلَّذِيٓ أَخْرَجَ اْلَّذِينَ كَفَرُواْ مِنْ أَهْلِ اْلْكِتَٰبِ مِن دِيَٰرِهِمْ لِأَوَّلِ اْلْحَشْرِۚ مَا ظَنَنتُمْ أَن يَخْرُجُواْۖ وَظَنُّوٓاْ أَنَّهُم مَّانِعَتُهُمْ حُصُونُهُم مِّنَ اْللَّهِ فَأَتَىٰهُمُ اْللَّهُ مِنْ حَيْثُ لَمْ يَحْتَسِبُواْۖ وَقَذَفَ فِي قُلُوبِهِمُ اْلرُّعْبَۚ يُخْرِبُونَ بُيُوتَهُم بِأَيْدِيهِمْ وَأَيْدِي اْلْمُؤْمِنِينَ فَاْعْتَبِرُواْ يَٰٓأُوْلِي اْلْأَبْصَٰرِ} [الحشر: 1-2]:

عن عائشةَ رضي الله عنها، قالت: «كانت غَزْوةُ بني النَّضِيرِ - وهم طائفةٌ مِن اليهودِ - على رأسِ ستَّةِ أشهُرٍ مِن وَقْعةِ بَدْرٍ، وكان مَنزِلُهم ونَخْلُهم بناحيةِ المدينةِ، فحاصَرَهم رسولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم حتى نزَلوا على الجَلاءِ، وعلى أنَّ لهم ما أقَلَّتِ الإبلُ مِن الأمتعةِ والأموالِ، إلا الحَلَقةَ؛ يَعني: السِّلاحَ؛ فأنزَلَ اللهُ فيهم: {سَبَّحَ لِلَّهِ مَا فِي اْلسَّمَٰوَٰتِ وَمَا فِي اْلْأَرْضِۖ} [الحشر: 1] إلى قولِه: {لِأَوَّلِ اْلْحَشْرِۚ مَا ظَنَنتُمْ أَن يَخْرُجُواْۖ} [الحشر: 2]، فقاتَلَهم النبيُّ صلى الله عليه وسلم حتى صالَحَهم على الجَلاءِ، فأَجْلاهم إلى الشَّامِ، وكانوا مِن سِبْطٍ لم يُصِبْهم جَلاءٌ فيما خلا، وكان اللهُ قد كتَبَ عليهم ذلك، ولولا ذلك لعذَّبَهم في الدُّنيا بالقتلِ والسَّبْيِ، وأمَّا قولُه: {لِأَوَّلِ اْلْحَشْرِۚ} [الحشر: 2]، فكان جَلاؤُهم ذلك أوَّلَ حَشْرٍ في الدُّنيا إلى الشَّامِ». أخرجه الحاكم (3850).

* قوله تعالى: {مَا قَطَعْتُم مِّن لِّينَةٍ أَوْ تَرَكْتُمُوهَا قَآئِمَةً عَلَىٰٓ أُصُولِهَا فَبِإِذْنِ اْللَّهِ وَلِيُخْزِيَ اْلْفَٰسِقِينَ} [الحشر: 5]:

عن عبدِ اللهِ بن عُمَرَ رضي الله عنهما، قال: «حرَّقَ رسولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم نَخْلَ بني النَّضِيرِ وقطَعَ، وهي البُوَيرةُ؛ فنزَلتْ: {مَا قَطَعْتُم مِّن لِّينَةٍ أَوْ تَرَكْتُمُوهَا قَآئِمَةً عَلَىٰٓ أُصُولِهَا فَبِإِذْنِ اْللَّهِ} [الحشر: 5]». أخرجه البخاري (٤٠٣١).

* قوله تعالى: {وَيُؤْثِرُونَ عَلَىٰٓ أَنفُسِهِمْ وَلَوْ كَانَ بِهِمْ خَصَاصَةٞۚ وَمَن يُوقَ شُحَّ نَفْسِهِۦ فَأُوْلَٰٓئِكَ هُمُ اْلْمُفْلِحُونَ} [الحشر: 9]:

عن أبي هُرَيرةَ رضي الله عنه: «أنَّ رجُلًا أتى النبيَّ صلى الله عليه وسلم، فبعَثَ إلى نسائِه، فقُلْنَ: ما معنا إلا الماءُ، فقال رسولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم: «مَن يضُمُّ أو يُضِيفُ هذا؟»، فقال رجُلٌ مِن الأنصارِ: أنا، فانطلَقَ به إلى امرأتِه، فقال: أكرِمي ضيفَ رسولِ اللهِ صلى الله عليه وسلم، فقالت: ما عندنا إلا قُوتُ صِبْياني، فقال: هَيِّئي طعامَكِ، وأصبِحي سِراجَكِ، ونَوِّمي صِبْيانَكِ إذا أرادوا عَشاءً، فهيَّأتْ طعامَها، وأصبَحتْ سِراجَها، ونوَّمتْ صِبْيانَها، ثم قامت كأنَّها تُصلِحُ سِراجَها فأطفأته، فجعَلَا يُرِيانِه أنَّهما يأكُلانِ، فبَاتَا طاوِيَينِ، فلمَّا أصبَحَ غَدَا إلى رسولِ اللهِ صلى الله عليه وسلم، فقال: «ضَحِكَ اللهُ اللَّيلةَ - أو عَجِبَ - مِن فَعالِكما»؛ فأنزَلَ اللهُ: {وَيُؤْثِرُونَ عَلَىٰٓ أَنفُسِهِمْ وَلَوْ كَانَ بِهِمْ خَصَاصَةٞۚ وَمَن يُوقَ شُحَّ نَفْسِهِۦ فَأُوْلَٰٓئِكَ هُمُ اْلْمُفْلِحُونَ} [الحشر: 9]». أخرجه البخاري (٣٧٩٨).

* سورةُ (الحَشْر):

سُمِّيت سورةُ (الحَشْر) بذلك؛ لوقوع لفظِ (الحشر) فيها؛ قال تعالى: {هُوَ اْلَّذِيٓ أَخْرَجَ اْلَّذِينَ كَفَرُواْ مِنْ أَهْلِ اْلْكِتَٰبِ مِن دِيَٰرِهِمْ لِأَوَّلِ اْلْحَشْرِۚ} [الحشر: 2].

والمراد بـ(الحَشْر) هنا: إخراجُ (بني النَّضِير)، لا يومُ القيامة.

* سورة (بني النَّضِير):

وسُمِّيت بذلك؛ لاشتمالها على قِصَّة إجلاء يهودِ (بني النَّضير).

1. إجلاء بني النَّضير (١-٥).

2. حُكْمُ الفَيء (٦-١٧).

3. التقوى، قوة القرآن، أسماء الله الحسنى (١٨-٢٤).

ينظر: "التفسير الموضوعي لسور القرآن الكريم" لمجموعة من العلماء (8 /60).

مقصودُ سورة (الحشر) تنزيهُ الله عز وجل عن كلِّ النقائص، وإثباتُ الكمال المطلق له؛ فهو الإله المستحِقُّ للعبادة؛ لكمال اتصافه بالقدرة الشاملة والحِكْمة البالغة، وهذه دعوةٌ لتوحيد الرُّبوبية والألوهية له سبحانه.

ويذكُرُ ابنُ عاشور أنَّ السورة جاءت لبيان: «حُكْم أموال بني النَّضير بعد الانتصار عليهم»، ثم يقول في بيان مقاصدها: «وقد اشتملت على أن ما في السموات وما في الأرض دالٌّ على تنزيه الله، وكونِ ما في السموات والأرض مِلْكَه، وأنه الغالب المدبِّر.

وعلى ذِكْرِ نعمة الله على ما يسَّر من إجلاء بني النَّضير مع ما كانوا عليه من المَنَعةِ والحصون والعُدَّة؛ وتلك آيةٌ من آيات تأييد رسول الله صلى الله عليه وسلم، وغَلَبَتِه على أعدائه.

وذِكْرِ ما أجراه المسلمون من إتلافِ أموال بني النَّضير، وأحكام ذلك في أموالهم، وتعيين مستحِقِّيه من المسلمين». "التحرير والتنوير" لابن عاشور (28 /63).

وينظر: "مصاعد النظر للإشراف على مقاصد السور" للبقاعي (3 /72).