ترجمة سورة الأحزاب

الترجمة البنغالية للمختصر في تفسير القرآن الكريم

ترجمة معاني سورة الأحزاب باللغة البنغالية من كتاب الترجمة البنغالية للمختصر في تفسير القرآن الكريم.

১. হে নবী! আপনি ও আপনার সাথীরা আদেশ-নিষেধ মান্য করার মাধ্যমে আল্লাহ ভীরুতার উপর অটল থাকুন এবং শুধু তাঁকেই ভয় করুন। আর কাফির ও মুনাফিকদের প্রবৃত্তির অনুসরণের কাজে তাদের আনুগত্য করবেন না। আল্লাহ কাফির ও মুনাফিকদের ছল-চাতুরী সম্পর্কে জানেন। তিনি তাঁর সৃষ্টি ও পরিচালনায় প্রজ্ঞাবান।
২. আর আপনি আপনার প্রতিপালকের আপনার উপর অবতীর্ণ করা ওহী অনুসরণ করুন। অবশ্যই তোমরা যা করো তা আল্লাহ জানেন। তাঁর নিকট এসবের কিছুই তাঁর অগোচর নয়। তিনি তোমাদের কাজের প্রতিদান দিবেন।
৩. আর তোমরা সর্ব বিষয়ে আল্লাহর উপর ভরসা করো। তিনি তাঁর উপর ভরসাকারী বান্দাদের হেফাজতকারী হিসাবে যথেষ্ট।
৪. যেমনিভাবে তিনি এক ব্যক্তির বক্ষদেশে দু’টি অন্তর সৃষ্টি করেন নি তেমনিভাবে বিবাহ হারাম হওয়ার ব্যাপারে স্ত্রীদেরকে মায়েদের সমান করেন নি। আর না পালক পুত্রদেরকে আপন পুত্রদের সমান করেছেন। কেননা “জেহার” তথা আপন স্ত্রীকে নিজের উপর হারাম করে নেয়া ও পালক পুত্রকে আপন পুত্রের মত করে দেখা জাহিলী যুগের সেসব প্রথার অন্তর্ভুক্ত যেগুলোকে ইসলাম হারাম ঘোষণা দিয়েছে। এহেন পালক পুত্র ও জেহারের কথা শুধুই তোমরা মুখে আওড়িয়ে থাক; যার কোন অস্তিত্ব নেই। বস্তুতঃ স্ত্রী যেমন মা হয় না তেমনি পালক পুত্র কখনো পুত্র হয় না। আল্লাহ হক কথা বলেন। যাতে তাঁর বান্দারা এর উপর আমল করতে পারে। এমনিভাবে তিনি হকের পথ প্রদর্শন করেন।
৫. তোমরা যাদেরকে তোমাদের সন্তান বলে মনে করো তাদেরকে তাদের প্রকৃত পিতাদের প্রতি সম্বন্ধিত করো। তাদের প্রতি সম্বন্ধিত করা আল্লাহর নিকট ইনসাফের নামান্তর। আর যদি তাদেরকে সম্বন্ধিত করার মত পিতাদের সন্ধান না পাও তবে তারা তোমাদের দ্বীনি ভাই ও তোমাদের কর্তৃক দাসত্বের পরাধীনতা থেকে মুক্ত হিসাবে পরিগণিত হবে। ফলে তাদেরকে ওহে ভাই কিংবা ওহে চাচাতো ভাই বলে আহŸান করো। আর ভুলবশতঃ কেউ যদি কোন পিতৃত্বের দাবীদারের প্রতি সম্বন্ধ করে ফেলে তবে তাতে কোন দোষ নেই। কিন্তু স্বেচ্ছায় এমনটি করলে পাপী হবে। আল্লাহ তাঁর বান্দাদের মধ্যে যারা তাঁর নিকট তাওবা করে তাদের ব্যাপারে ক্ষমামীল ও দয়াশীল। তাই তো তিনি তাদেরকে ভুলের কারণে পাকড়াও করেন না।
৬. নবী মুহাম্মদ যেসব কাজের প্রতি মুমিনদেরকে আহŸান জানিয়েছেন তাতে তিনি তাদের নিজেদের অপেক্ষা আরো আন্তরিক। যদিও বা তাদের মন তিনি ছাড়া অন্যদের প্রতি ধাবিত হয়ে থাকে। আর তাঁর স্ত্রীগণ সকল মুমিন সম্প্রদায়ের মাতা স্বরূপ। ফলে তাদের প্রত্যেকের উপর তাঁর মৃত্যুর পর তাঁদেরকে বিয়ে করা হারাম। আর উত্তরাধিকারের ক্ষেত্রে ঈমান ও আল্লাহর পথে হিজরতকারীদের মধ্য হতে যারা ইসলামের প্রথম যুগে পারস্পরিক উত্তরাধিকার লাভ করতো। অতঃপর তাদের পারস্পরিক উত্তরাধিকারের বিধান রহিত হয়ে যায়। এখন তাদের নিকটাত্মীয়দের একজন অপরজন অপেক্ষা অধিক হকদার। তবে হাঁ যদি তোমরা উত্তরাধিকার ব্যতিরেকে তোমাদের বন্ধুদের সাথে সদাচরণমূলক ওসীয়ত ও অনুদানের কিছু করতে চাও তাতে কোন বাধা নেই। এটি লাওহে মাহফুজে লিপিবদ্ধ রয়েছে, তাই তার উপর আমল করা জরুরী।
৭. আর হে নবী! আপনি সেই সময়ের কথা স্মরণ করুন যখন আমি নবীদের নিকট থেকে এই মর্মে দৃঢ় অঙ্গীকার নেই যে, তাঁরা যেন এককভাবে আল্লাহর এবাদত করেন। আর তাঁর সাথে কাউকে শরীক না করে। আর যেন তাঁরা তাঁদের উপর প্রেরিত ওহী পৌঁছে দেয়। বিশেষ করে আমি, নূহ, ইব্রাহীম, মূসা ও ঈসার নিকট থেকে তা গ্রহণ করেছি। তাঁদের নিকট থেকে তাঁদের উপর ন্যস্ত আল্লাহর বার্তা পৌঁছানোর দায়িত্ব পালনের জন্য সুদৃঢ় অঙ্গীকার নিয়েছি।
৮. আল্লাহ নবীদের নিকট থেকে এহেন দৃঢ় অঙ্গীকার গ্রহণ করেছেন। যাতে করে কাফিরদেরকে নিরুত্তর করার জন্যে সত্যবাদী রাসূলদেরকে প্রশ্ন করতে পারেন। আর তাঁকে ও তাঁর রাসূলদেরকে অস্বীকারকারীদের উদ্দেশ্যে কষ্ট দায়ক শাস্তি প্রস্তুত করে রেখেছেন যা হচ্ছে জাহান্নাম।
৯. হে আল্লাহতে বিশ্বাসী ও তাঁর শরী‘য়াতে আমলকারীরা! তোমরা তোমাদের উপর আল্লাহর নি‘আমতের কথা স্মরণ করো যখন মদীনাতে বহুজাতিক বাহিনী তোমাদের সাথে যুদ্ধ করার উদ্দেশ্যে আগমন করল এবং মুনাফিক আর ইহুদীরা তাদের সহযোগিতা করল তখন আমি তাদের উপর এমন এক বায়ু প্রেরণ করলাম যা হচ্ছে পুবালী হাওয়া। যদ্বারা নবীকে সাহায্য করা হয়েছে। আর আমি ফিরিশতাদের মধ্য হতে এমন ফিরিশতা বাহিনী প্রেরণ করলাম যা তোমরা দেখ নি। ফলে কাফিররা মুখ ফিরিয়ে পালিয়ে গেল। তারা কিছুই করতে পারলো না। আল্লাহ তোমাদের কর্ম সম্পর্কে সর্বদ্রষ্টা। তাঁর নিকট কিছুই গোপন থাকে না এবং তিনি তোমাদের কাজের প্রতিদান দিবেন।
১০. আর তা তখন হয়েছিল যখন শত্রæরা উপত্যকার উপর ও নিচ দিয়ে পূর্ব ও পশ্চিম উভয় দিক থেকে এসেছিল। তখন সব দিক থেকে চক্ষু ফিরে গিয়ে শুধু শ্রত্রæদের প্রতি ধাবিত হয়েছিল। আর অন্তরগুলো কন্ঠনালীতে চলে এসেছিল এবং তোমরা আল্লাহ সম্পর্কে নানারকম চিন্তা করতেছিলে। কখনো সাহায্যের চিন্তা। আবার কখনো তা থেকে নিরাশ হয়েছিলে।
১১. এহেন অবস্থানে খন্দকের যুদ্ধের দিন মুমিনদেরকে পরীক্ষা করা হয়েছিল। যখন তারা শত্রæদের চতুর্মুখী আক্রমণের সম্মুখীন হয়েছিল। তারা সেদিন ভীষণ ভীতির সম্মুখীন হয়ে মারাত্মকভাবে দুর্বিপাকে পড়েছিল। আর উক্ত পরীক্ষায় প্রকৃত মুমিন আর কাফিরের মধ্যে পার্থক্য ফুটে উঠেছিল।
১২. সেদিন মুনাফিক ও দুর্বল ঈমানদার মুমিন যাদের অন্তরে সন্দেহ রয়েছে তারা বলবে: আমাদেরকে আল্লাহ ও তাঁর রাসূল শত্রæর উপর বিজয় আর যমীনে প্রতিপত্তির যে অঙ্গীকার করেছেন তা ছিল মিথ্যা; যার কোন ভিত্তি নেই।
১৩. হে রাসূল! ওই সময়ের কথা স্মরণ করুন যখন মুনাফিকদের একটি দল মদীনাবাসীর উদ্দেশ্যে বলেছিল: হে ইয়াসরিববাসী! -মদীনার পুরনো নাম- “সাল” পাহাড়ের শক্ত পাদদেশে তথা খন্দকের নিকটে তোমাদের অশ্রয়ের কোন স্থান নেই। তাই তোমরা বাড়ী ফিরে যাও। আর অপর দল নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর নিকট তাদের ঘর-বাড়ী শত্রæদের জন্য খোলা দরজা বলে আখ্যায়িত করে বাড়ী ফেরতের আনুমতি চাইল। অথচ তাদের ঘর-বাড়ী শত্রæদের জন্য খোলা দরজা ছিল না বরং তারা এহেন মিথ্যা ওযর দ্বারা কেবল শ্রত্রæ থেকে পালিয়ে যাওয়ার ইচ্ছা করেছিল।
১৪. আর যদি শত্রæ মদীনার চতুর্দিক দিয়ে প্রবেশ করে তাদেরকে কুফরি ও আল্লাহর সাথে শিরকের প্রস্তাব রাখত তবে তারা তাদেরকে কথা দিয়ে দিত এবং ধর্ম ত্যাগ আর কুফরি থেকে অল্প সংখ্যক ব্যতীত কেউ বিরত থাকত না।
১৫. এসব মুনাফিক উহুদের দিন যুদ্ধ থেকে পালিয়ে যাওয়ার পর আল্লাহর সাথে অঙ্গীকার করেছিল যে, আল্লাহ যদি তাদেরকে অন্য কোন যুদ্ধে হাজির করেন তবে তারা শত্রæর সাথে যুদ্ধ করবে; তাদের ভয়ে পলায়ন করবে না। কিন্তু তারা অঙ্গীকার ভঙ্গ করল। অথচ বান্দার উপর আল্লাহর সাথে কৃত অঙ্গীকার ভঙ্গ করার জন্যে জবাবদিহিতা রয়েছে এবং অচিরেই তাকে জিজ্ঞাসা করা হবে।
১৬. হে রাসূল! আপনি বলুন: তোমরা মৃত্যু আর হত্যা থেকে যতই পালাও এসব পালানো তোমাদের কোনই উপকারে আসবে না। কেননা, আয়ু নির্ধারিত রয়েছে। ফলে আয়ু ফুরিয়ে গেলে পালানোর মাধ্যমে সামান্য উপভোগ ব্যতীত কোনই লাভ হবে না।
১৭. হে রাসূল! তাদেরকে বলুন: আল্লাহ যদি তোমাদের অপছন্দের মৃত্যু কিংবা হত্যা লিখে রাখেন তবে কে তোমাদেরকে তা থেকে রক্ষা করবে? আর তোমরা যে কল্যাণ কামনা করো তা যদি তিনি প্রদান করতে চান তবে তা বারণ করারও কেউ নেই। এসব মুনাফিক আল্লাহ ব্যতীত এমন কোন সাহায্যকারী পাবে না যে তাদের দায়-দায়িত্ব গ্রহণ করবে। আর না এমন কোন সাহায্যকারী পাবে যে তাদেরকে আল্লাহর শাস্তি থেকে রেহাই দিতে পারবে।
১৮. আল্লাহ তাদের খবর জানেন যারা রাসূলের সঙ্গ দিয়ে যুদ্ধ করা থেকে অন্যকে বারণ করে ও তাদের ভাইদেরকে বলে: আমাদের দিকে আসো। আর তাঁর সাথে যুদ্ধ করো না। যাতে হত্যার সম্মুখীন না হও। কেননা, আমরা তোমাদের হত্যার ভয় করি। বস্তুতঃ এসব অপদার্থরা অতি অল্পই যুদ্ধে অংশ নিয়ে থাকে। তাও শুধু তাদের দোষ ঢাকার লক্ষ্যে তা করে থাকে। আল্লাহ ও তাঁর রাসূলকে সাহায্য করার উদ্দেশ্যে নয়।
১৯. ওহে মুমিন সম্প্রদায়! তারা তোমাদের উপর তাদের সম্পদ ব্যয় করার ক্ষেত্রে কৃপণ। ফলে তা ব্যয় করার মাধ্যমে তারা তোমাদেরকে সাহায্য করবে না। আর তাদের জানের ব্যাপারেও কৃপণ। ফলে তোমাদের সাথে আন্তরিকভাবে যুদ্ধও করবে না। তারা তোমাদের ব্যাপারেও কৃপণ। ফলে তারা তোমাদেরকে ভালও বাসবে না। যখন শত্রæর সাথে সাক্ষাৎকালে ভয় আসে তখন হে রাসূল! তাদেরকে দেখবেন, তারা আপনার দিকে এমনভাবে তাকাচ্ছে যে, তাদের চক্ষুগুলো মুমূর্ষু ব্যক্তির চোখের ন্যায় ঘুরপাক খাচ্ছে। আর যখন ভয় চলে যায় এবং তারা শান্ত হয় তখন তোমাদেরকে কটু কথার সাহয্যে কষ্ট দিয়ে থাকে। গনীমতের মালের ক্ষেত্রে খুবই লোভী; তারা তা খুঁজে বেড়ায়। এসব বৈশিষ্ট্যে বৈশিষ্ট্যবান লোক প্রকৃতপক্ষে ঈমান আনয়ন করেনি। ফলে আল্লাহ তাদের আমলের প্রতিদান বাতিল করেছেন। আর এহেন বাতিল করণের কাজ আল্লাহর উপর অতি সহজ।
২০. এসব কাপুরুষেরা মনে করে যে, রাসূল ও সাহাবীদের বিরুদ্ধে যুদ্ধের উদ্দেশ্যে ঐক্যবদ্ধ হওয়া এসব দলগুলো মুমিনদেরকে সমূলে ধ্বংস না করে ফিরবে না। আর যদি ধরে নেয়া যায় যে, শত্রæরা দ্বিতীয়বারের মত আবার আসবে তবে এসব মুনাফিকরা চাইবে যে, তারা যেন মদীনার বাইরে বেদুইনদের সাথে অবস্থান করে। আর সেখান থেকে তোমাদের খবর নেয় এই মর্মে যে, শত্রæদের সাথে যুদ্ধে তোমাদের কী হল। তারা যদি হে মুমিনরা! তারা তোমাদের মাঝেই অবস্থান করে। তবে কিছু সংখ্যক ছাড়া আর কেউ যুদ্ধ করবে না। তাই তাদেরকে নিয়ে কোন পরওয়া কিংবা আক্ষেপ করো না।
২১. তোমাদের জন্য রাসূলের কথা, আচরণবিধি ও কাজে রয়েছে উত্তম আদর্শ। তিনি নিজে উপস্থিত হয়ে স্বয়ং যুদ্ধে অংশ নিয়েছেন। তদুপরি তোমরা কীভাবে তাঁর ক্ষেত্রে কার্পণ্য করতে পারো? বস্তুতঃ আল্লাহর রাসূলের অনুসরণ কেবল সেই করে যে ব্যক্তি আল্লাহ ও পরকালের আশা রাখে ও তদুদ্দেশ্যে আমল করে আর আল্লাহকে বেশী বেশী স্মরণ করে। পক্ষান্তরে যে ব্যক্তি পরকালে আশাবাদী নয় এবং আল্লাহকে বেশী বেশী স্মরণ করে না সে তাঁর অনুসরণ করে না।
২২. মুমিনরা যখন বহুজাতিক বাহিনীকে তাদের সাথে লড়াইয়ের উদ্দেশ্যে জড় হতে দেখল তখন তারা বলে উঠল, এটিই সেই পরীক্ষা, বিপর্যয় ও বিজয় যে সম্পর্কে আল্লাহ ও তদীয় রাসূল আমাদেরকে ওয়াদা দিয়েছেলেন। আর আল্লাহ ও তাঁর রাসূল সত্যই বলেছেন। কেননা, তা বাস্তবে রূপ লাভ করেছে। বস্তুতঃ তাদের বাহিনী দেখা ঈমান ও আনুগত্যকেই বৃদ্ধি করেছে।
২৩. মুমিনদের মধ্যে এমন কিছু লোক রয়েছে যারা আল্লাহর সাথে সততার প্রমাণ দিয়েছে। তাই তারা তাঁর সাথে কৃত অঙ্গীকারকে আল্লাহর পথে জিহাদে ধৈর্য ও অটল থাকার মাধ্যমে বাস্তবায়ন করেছে। ফলে তাদের মধ্যকার কেউ আল্লাহর পথে হত্যার সম্মুখীন হয়েছে কিংবা মৃত্যু বরণ করেছে। আর তাদের মধ্যে কেউ তাঁর পথে জিহাদে শহীদ হওয়ার অপেক্ষায় রয়েছে। আর তারা আল্লাহর সাথে কৃত অঙ্গীকারকে মুনাফিকদের মত পরিবর্তন করে নি।
২৪. যাতে করে আল্লাহ সত্যপরায়ণদেরকে পুরস্কৃত করতে পারেন। যারা বিশ্বস্ততা ও সততার মাধ্যমে আল্লাহর সাথে কৃত অঙ্গীকারকে বাস্তবে রূপ দিয়েছে। আর অঙ্গীকার ভঙ্গকারী মুনাফিকদেরকে চাইলে কুফরি থেকে তাওবা করার পূর্বে মৃত্যু দানের মাধ্যমে শাস্তি প্রদান করবেন। আর চাইলে তাওবার তাওফীক দানের মাধ্যমে তাদের তাওবা কবুল করবেন। আল্লাহ পাপ থেকে তাওবাকারীদের জন্য ক্ষমাশীল ও তাদের প্রতি দয়ালু।
২৫. আর আল্লাহ কুরাইশ, গাতাফান ও তাদের সঙ্গীদেরকে তাদের চিন্তা ও আপদসহ নিরাশ করে ফিরিয়ে দিয়েছেন। তারা মুমিনদেরকে মূলোৎপাটন করার যে ইচ্ছা পোষণ করেছিল তা সফল করতে পারে নি। আল্লাহ মুমিনদের থেকে তাদের সাথে যুদ্ধকে বায়ু ও ফিরিশতা প্রেরণ করার মাধ্যমে প্রতিহত করেছেন। আর আল্লাহ ক্ষমতাশালী ও পরাক্রমশালী। তাঁর সাথে কেউ মুকাবেলা করতে গেলেই পরাভুত ও অপমানিত হয়।
২৬. আর আল্লাহ তাদের সাহায্যকারী ইহুদীদেরকে -যারা শত্রæ থেকে আত্মরক্ষার উদ্দেশ্যে দুর্গে আশ্রয় নিয়েছিল- সেখান থেকে অবতারিত করলেন এবং তাদের অন্তরে ভীতি ঢেলে দিলেন। ফলে তোমরা এক দলকে হত্যা করছিলে। আর অপর দলকে বন্দী করছিলে।
২৭. আর আল্লাহ তাদেরকে ধ্বংস করার পর তোমাদেরকে তাদের শস্য ও খেজুরসহ জমির মালিক বানিয়েছেন এবং তোমাদেরকে তাদের ঘর-বাড়ী ও অন্যান্য সম্পদের মালিক বানিয়েছেন। এমনকি তোমাদেরকে খাইবারের জমিরও মালিক বানিয়েছেন। যাতে এখনও তোমরা পদার্পণ করো নি। তবে অচিরেই তাতে পদার্পণ করবে। আর এটি মুমিনদের জন্য অঙ্গীকার ও সুসংবাদ। বস্তুতঃ আল্লাহ সর্ব বিষয়ে ক্ষমতাবান। তাঁকে কোন কিছু অপারগ করতে পারে না।
২৮. হে নবী! আপনি আপনার স্ত্রীদেরকে যখন তারা ভরণ-পোষণের প্রবৃদ্ধির কথা উঠায় অথচ আপনার নিকট তার কোন ব্যবস্থা নেই তখন বলুন যে, তোমরা যদি দুনিয়ার জীবন ও তার চাকচিক্য কামনা করো তবে আস আমি তোমাদেরকে তালাকপ্রাপ্তাদের মত ক্ষতি ও কষ্ট ব্যতিরেকে কিছু দিয়ে তালাক প্রদান করি।
২৯. আর যদি তোমরা আল্লাহ ও তদীয় রাসূলের সন্তুষ্টি, জান্নাত ও পরকালের জীবন কামনা করো তবে তোমাদের অবস্থার উপর ধৈর্য ধারণ করো। কেননা, আল্লাহ ধৈর্য ধারণকারী ও উত্তম সং¯্রবের মাধ্যমে সদাচারী তাদের উদ্দেশ্যে মহা পুরস্কার প্রস্তুত করে রেখেছেন।
৩০. হে নবীর স্ত্রীগণ! তোমাদের মধ্যে যে প্রকাশ্যে পাপ করবে তাকে তার স্তর ও মর্যাদার কারণে এবং নবীর মর্যাদা রক্ষার্থে ক্বিয়ামত দিবসে দ্বিগুণ শাস্তি প্রদান করা হবে। বস্তুতঃ আল্লাহর নিকট এহেন শাস্তি প্রদান সহজ।
৩১. আর তোমাদের মধ্যে যে আল্লাহ ও রাসূলের আনুগত্যের উপর অটল থাকবে এবং আল্লাহর নিকট পছন্দসই নেক আমল করবে আমি তাকে অন্যসব মহিলাদের তুলনায় দ্বিগুণ প্রতিদান দিবো। আর আমি তার উদ্দেশ্যে পরকালে সম্মানী প্রতিদান প্রস্তুত করে রাখবো যা হচ্ছে জান্নাত।
৩২. হে নবী মুহাম্মদের স্ত্রীরা! তোমরা সম্মান ও মর্যাদায় অন্য কোন মহিলার মত নও বরং তোমরা যদি আল্লাহর আদেশ-নিষেধ মান্য করে চলো তাহলে তোমাদের সম্মান ও মর্যাদায় অন্য কোন মহিলা পৌঁছুতে অপারগ হবে। ফলে তোমরা পরপুরুষের সাথে কথা বলার সময় কথাকে নরম ও স্বরকে কোমল করো না। কেননা তাতে করে যার অন্তরে মুনাফিকী ও হারাম কাজের প্রবৃত্তি রয়েছে সে লালসা পোষণ করবে। বরং তোমরা সংশয়মুক্তভাবে শুধু প্রয়োজন ও পরিমাণমত কথা বলবে।
৩৩. আর তোমরা তোমাদের ঘরে অবস্থান করো। প্রয়োজন ব্যতীত সেখান থেকে বের হবে না। আর প্রাক ইসলামী যুগের মহিলাদের মত সৌন্দর্য প্রকাশ করবে না। তারা পুরুষদেরকে আকৃষ্ট করার নিমিত্তে তা প্রকাশ করত। তোমরা নামায পরিপূর্ণভাবে সুসম্পন্ন করো এবং সম্পদের যাকাত প্রদান করো। আর আল্লাহ ও তদীয় রাসূলের আনুগত্য করো। হে আল্লাহর রাসূলের স্ত্রী ও তাঁর পরিজনেরা! আল্লাহ তোমাদের অন্তরকে মন্দ স্বভাব থেকে মুক্ত ও উত্তম স্বভাব দ্বারা সুসজ্জিত করে পূর্ণ মাত্রায় তোমাদেরকে পবিত্র করতে চান। যাতে সামান্যতম কদর্যও অবশিষ্ট থাকবে না।
৩৪. আর তোমরা তোমাদের ঘরে রাসূলের উপর অবতীর্ণ আল্লাহর যেসব আয়াত ও পবিত্র হাদীস পাঠ করা হয় তা স্মরণ করো। আল্লাহ তোমাদের উপর অনুগ্রহশীল বিধায় তোমাদেরকে রাসূলের ঘরে নিয়ে এসেছেন এবং তিনি তোমাদের ব্যাপারে পরিজ্ঞাত বিধায় রাসূলের স্ত্রী হিসাবে ও তাঁর উম্মতের মুমিন সম্প্রদায়ের মাতামহ হিসাবে চয়ন করেছেন।
৩৫. আল্লাহর আনুগত্যের মাধ্যমে বিনয় অবলম্বনকারী পুরুষ ও নারী, আল্লাহকে সত্যায়নকারী পুরুষ ও নারী, আল্লাহকে মান্যকারী পুরুষ ও নারী, ঈমান ও কথায় সত্যবাদী পুরুষ ও নারী, আনুগত্যের কাজে, পাপ থেকে বিরত থাকা ও বিপদে ধৈর্য ধারণকারী পুরুষ ও নারী, ফরয ও নফল খাতে সম্পদ ব্যয়কারী পুরুষ ও নারী, ফরয ও নফল পর্যায়ের রোযাব্রত পালনকারী পুরুষ ও নারী, পরপুরুষ থেকে লজ্জা স্থান ঢেকে রাখা ও অশ্লীল এবং তার প্রারম্ভিক কাজ থেকে নিজকে হেফাজতকারী পুরুষ ও নারী, আল্লাহকে জিহŸা ও অন্তর দ্বারা প্রকাশ্যে-অপ্রকাশ্যে বেশী বেশী স্মরণকারী পুরুষ ও নারী, এদের জন্য আল্লাহ তাঁর পক্ষ থেকে তাদের পাপের ক্ষমার ব্যবস্থা রেখেছেন। আরো রেখেছেন ক্বিয়ামতের দিন মহা প্রতিদান যা হচ্ছে জান্নাত।
৩৬. কোন মুমিন পুরুষ কিংবা নারীর জন্য বৈধ নয় যে, আল্লাহ ও তদীয় রাসূল তাদের মধ্যে কোন বিষয়ে ফয়সালা দেয়ার পর তারা সেখানে গ্রহণ কিংবা বর্জনের জন্য নিজেদের কোন মতামত ব্যক্ত করবে। যে আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের অবাধ্যতা করল সে সরল পথ থেকে সুস্পষ্ঠভাবে পথভ্রষ্ট হয়ে গেল।
৩৭. আল্লাহ যাকে ইসলামে দীক্ষিত করে অনুগ্রহ করেছেন এবং আপনি তাকে স্বাধীন করার মাধ্যমে অনুগ্রহ করেছেন (যায়দ বিন হারিসা-রাযিয়াল্লাহু আনহু) সে যখন আপনার নিকট তার স্ত্রী যায়নাব বিনতে জাহাশকে তালাক দেয়ার ব্যাপারে পরমর্শ চাইতে এসেছিল তখন আপনি তাকে বলছিলেন, তোমার স্ত্রীকে তালাক না দিয়ে তাকে তোমার সাথেই রাখ। আর আদেশ-নিষেধ মান্য করার মাধ্যমে আল্লাহকে ভয় করো। হে রাসূল! যায়নাবের সাথে আপনার বিবাহের ব্যাপারে আল্লাহ যে ওহী নাযিল করেছেন তা মানুষের ভয়ে নিজ অন্তরে গোপন রেখেছিলেন। অথচ আল্লাহ তার স্বামী যায়দ কর্র্তৃক তার তালাক ও আপনার সাথে তার বিয়ের কথা প্রকাশকারী। আর আল্লাহই বেশী হকদার যে, এ ব্যাপারে আপনি তাঁকেই ভয় করবেন। অতঃপর যায়দ যখন সম্মত হল এবং সে তার থেকে বিমুখ হয়ে তাকে তালাক দিল তখন আমি আপনার সাথে তার পরিণয়সূত্র জুড়ে দিলাম। যাতে মুমিনদের জন্য পালক পুত্রের স্ত্রীদেরকে তালাক ও মেয়াদোত্তীর্ণ হয়ে যাওয়ার পর তাদের কর্তৃক বিয়ের মধ্যে কোন পাপ না থাকে। আর আল্লাহর ফায়সালা কার্যকরী। তাঁকে নিষিদ্ধকারী বা বাধাগ্রস্তকারী কিছু নেই।
৩৮. নবী মুহাম্মদের উপর আল্লাহর পক্ষ থেকে হালালকৃত বিষয় তথা তার পালক পুত্রের স্ত্রীর সাথে বিয়ের ক্ষেত্রে কোন প্রকার পাপ কিংবা অভিযোগ নেই। তিনি তাতে পূর্বের নবীদের আদর্শের অনুসরণ করেন মাত্র। এতে তিনি নতুন কিছু উদ্ভাবন করেন নি। বস্তুতঃ এহেন বিবাহ বাস্তবায়ন করা ও পালকপুত্রের ব্যাপারে প্রচলিত বিশ্বাসকে খÐন করা আল্লাহর অমোঘ বিধান যা অবধারিত। তাতে নবীর কোন অভিমত ব্যক্ত করার সুযোগ নেই। আর না তাকে প্রতিহত করার কিছু আছে।
৩৯. এসব নবী আল্লাহর পক্ষ থেকে তাঁদের প্রতি অবতীর্ণ বার্তা স্বীয় উম্মতদের নিকট পৌঁছিয়ে থাকেন। তাঁরা আল্লাহ ব্যতীত কাউকে ভয় করেন না। ফলে তাঁরা আল্লাহর হালালকৃত কাজ করার সময় অন্য কারো দিকে ভ্রƒক্ষেপ করেন না। আর আল্লাহই হিসাব তথা ভালোর বদলে ভালো আর মন্দের বদলে মন্দ প্রতিদানের উদ্দেশ্যে তাঁর বান্দাদের আমল সংরক্ষণের জন্য যথেষ্ট।
৪০. মুহাম্মদ তোমাদের কোন পুরুষের পিতা নন। ফলে তিনি যায়দের পিতাও নন যে, তাঁর জন্য তার তালাকপ্রাপ্তা স্ত্রীকে বিয়ে করা হারাম হবে বরং তিনি মানুষের প্রতি প্রেরিত আল্লাহর রাসূল ও শেষ নবী। তাঁর পরে কোন নবী নেই। আল্লাহ সর্ব বিষয়ে সর্বজ্ঞাতা। তাঁর নিকট স্বীয় বান্দাদের কোন বিষয় গোপন থাকে না।
৪১. ওহে আল্লাহর উপর ঈমান আনয়নকারী ও তাঁর শরীয়তের উপর আমলকারীরা! তোমরা আল্লাহকে তোমাদের অন্তর, জিহŸা ও অঙ্গ প্রত্যঙ্গের সাহায্যে বেশী বেশী স্মরণ করো।
৪২. আর দিনের শুরুতে ও শেষে এতদুভয়ের ফযীলত সাপেক্ষে তাঁর তাসবীহ ও তাহলীল পাঠ পূর্বক পবিত্রতা বর্ণনা করো।
৪৩. তিনিই তোমাদের উপর রহমত অবতীর্ণ করেন ও তোমাদের প্রশংসা করেন। আর তাঁর ফিরিশতাগণ তোমাদের উদ্দেশ্যে দো‘আ করেন। যাতে আল্লাহ তোমাদেরকে কুফরির অন্ধকার থেকে ইসলামের আলোর দিকে নিয়ে আসেন। তিনি মুমিনদের ব্যাপারে দয়াবান। ফলে তারা আদেশ-নিষেধ মান্য করার মাধ্যমে তাঁর আনুগত্য করলে তিনি তাদেরকে শাস্তি প্রদান করবেন না।
৪৪. মুমিনরা যেদিন স্বীয় প্রতিপালকের সাথে সাক্ষাৎ করবে সেদিন তাদের অভিবাদন হবে এই বলে যে, তোমাদের উপর সর্ব প্রকার অনিষ্ট থেকে শান্তি ও নিরাপত্তা। আর আল্লাহ তাদের উদ্দেশ্যে তাঁর আনুগত্যের কাজ করা ও অবাধ্যতা থেকে বিরত থাকার জন্যে প্রস্তুত করে রেখেছেন সম্মানী প্রতিদান যা হচ্ছে জান্নাত।
৪৫. হে নবী! নিশ্চয়ই আমি আপনাকে মানুষদের প্রতি সাক্ষী স্বরূপ পাঠিয়েছি। আপনাকে যা দিয়ে তাদের নিকট পাঠানো হয়েছে আপনি তা তাদের নিকট পৌঁছে দিয়েছেন। আপনি মুমিনদেরকে তাদের উদ্দেশ্যে আল্লাহ কর্তৃক প্রস্তুতকৃত জান্নাতের সুসংবাদদাতা ও কাফিরদের উদ্দেশ্যে প্রস্তুতকৃত শাস্তির দুঃসংবাদ পেিবশনকারী।
৪৬. আমি আপনাকে আল্লাহর নির্দেশের আনুগত্যের মাধ্যমে তাঁর তাওহীদের প্রতি আহŸানকারী হিসাবে পাঠিয়েছি যেমন পাঠিয়েছি দ্বীপ্তমান প্রদীপরূপে। যাকে দেখে হেদায়তকামীরা পথের সন্ধান লাভ করে।
৪৭. আপনি আল্লাহর উপর ঈমান আনয়নকারী ও তাঁর শরীয়তের উপর আমলকারীদেরকে সুসংবাদ প্রদান করুন যে, তাদের জন্য রয়েছে মহা অনুগ্রহ। যা দুনিয়াতে তাদের জন্য সাহায্য ও পরকালে জান্নাতে প্রবেশের মাধ্যমে রূপ লাভ করবে।
৪৮. কাফির ও মুনাফিকরা আপনাকে দ্বীন থেকে ব্যাহত রাখার ব্যাপারে আহŸান জানালে আপনি তাদের অনুসরণ না করে তাদের থেকে বিমুখ থাকুন। হতে পারে এটি আপনার কর্তৃক তাদের প্রতি আনিত বিষয়ের উপর ঈমান আনয়নের পথে অধিক সহযোগী হবে। সকল কাজে আল্লাহর উপর ভরসা রাখুন। তন্মধ্যে রয়েছে আপনার শত্রæদের উপর সাহায্য। বস্তুতঃ আল্লাহ দায়িত্বশীল হিসাবে যথেষ্ট। বান্দারা ইহ ও পরকালীন সর্ব বিষয়ে তাঁর উপর ভরসা করে থাকেন।
৪৯. ওহে আল্লাহর উপর ঈমান আনয়নকারী ও তাঁর শরীয়তের উপর আমলকারীরা! তোমরা মুমিন রমণীদের সাথে পরিণয় সূত্রে আবদ্ধ হয়ে তাদের সাথে বাসর করার পূর্বে তালাক দিলে তাদের গর্ভ সন্তানমুক্ত সাব্যস্ত হওয়ার উদ্দেশ্যে তোমাদের জন্য তাদের উপর মাস কিংবা মাসিকের হিসাব দ্বারা কোন মেয়াদ পালন বর্তায় না। যেহেতু তাদের সাথে তোমাদের বাসরই হয় নি। আর তোমরা তালাক জনিত কারণে তাদের ভাঙ্গা মনের সান্ত¦নাস্বরূপ তোমাদের সম্পদ দ্বারা সামর্থ্য অনুযায়ী তাদেরকে উপকৃত করো। আর কষ্ট না দিয়ে তাদেরকে নিজ পরিবারে যেতে দাও।
৫০. হে নবী! আপনার জন্য আমি মহর প্রদান করা রমণীদেরকে হালাল করেছি। আরও হালাল করেছি আল্লাহ প্রদত্ত যুদ্ধে প্রাপ্ত বন্দীদেরকে। এমনিভাবে আপনার চাচাত, ফুফাত, মামাত ও খালাত বোনদেরকেও হালাল করেছি। যারা আপনার সঙ্গে মক্কা থেকে হিজরত করে মদনিায় আগমন করেছে। আমি আপনার জন্য সেই রমণীকেও হালাল করেছি যে নিজেকে আপনার কাছে বিনা মহরে সঁপে দিয়েছে। আপনি যদি তাকে বিয়ে করতে চান। তবে তা শুধু তাঁর (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সাথে সীমাবদ্ধ; যা উম্মতের অন্য কারো জন্য বৈধ নয়। আমি অবশ্যই জানি মুমিনদের উপর তাদের স্ত্রীদের ব্যাপারে কী অবধারিত করেছি। বস্তুতঃ তাদের জন্য চারজনের বেশী স্ত্রী বৈধ নয়। এমনিভাবে আমি জানি দাসীদের ব্যাপারে কী বিধিবদ্ধ করেছি। তাদের সংখ্যা সীমাবদ্ধ করা ব্যতিরেকে যতজন ইচ্ছা উপভোগ করার সুযোগ রয়েছে। বস্তুতঃ আপনার জন্য এমন কিছু বৈধ করেছি যা অন্যের জন্য বৈধ করিনি। তা এজন্য যে, যাতে আপনাকে বিশেষ সমস্যা ও কষ্ট না পোহতে হয়। আল্লাহ তাঁর তাওবাকারী বান্দাদের উপর ক্ষমাশীল ও দয়ালু।
৫১. হে নবী! আপনি আপনার স্ত্রীদের মধ্যে যাকে ইচ্ছা তার পালা পিছিয়ে দিন। ফলে তার সঙ্গে রাত্রি যাপন করবেন না। আর যাকে ইচ্ছা আপনার সঙ্গে মিলিয়ে নিন। তবে পালা পিছিয়ে দেয়াকে মিলিয়ে নিতে চাইলে এতে কোন পাপ নেই। এহেন সুযোগ ও সহজতা এজন্য যে, যাতে করে আপনার স্ত্রীদের চক্ষু শীতল হতে পারে। আর আপনি তাদের সবাইকে যা প্রদান করেন তাতে তারা আপনার দায়িত্ব পালনে সদয় ও অধিকার আদায়ে কার্পণ্য না দেখে আপনার উপর সন্তুষ্ট থাকতে পারে। ওহে পুরুষেরা! তোমাদের অন্তরে কোন স্ত্রীর তুলনায় অন্য স্ত্রীর প্রতি যে দুর্বলতা রয়েছে সে সম্পর্কে আল্লাহ অবগত রয়েছেন। আল্লাহর নিকট তাঁর বান্দাদের কর্মকাÐের কোন কিছুই গোপন থাকে না। তিনি তাদের ব্যাপারে সহনশীল; তিনি তাদেরকে তড়িৎ শাস্তি দেন না।
৫২. হে রাসূল! আপনার জন্য বৈধ নয় যে, যেসব রমণী আপনার দাম্পত্যে রয়েছে তাদের ব্যতীত অন্য রমণীকে বিয়ে করবেন কিংবা এদের সবাইকে অথবা কয়েকজনকে তালাক প্রদান করে অন্য রমণীদের বিয়ে করবেন যদিও বা তাদের সৌন্দর্য আপনাকে এদের তুলনায় বিমোহিত করে। তবে হাঁ আপনার জন্য এটি বৈধ রয়েছে যে, আপনার অধীন দাসীদেরকে অনির্দিষ্ট সংখ্যায় উপভোগ করবেন। আল্লাহ সর্ব বিষয়ে রক্ষণাবেক্ষণকারী। উক্ত বিধানটি উম্মাহাতুল মুুমনীনদের মর্যাদার প্রমাণবাহী। কেননা, এতে তাঁদেরকে তালাক প্রদান ও তাঁদের সাথে অন্যদেরকে বিয়ের নিষিধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে।
৫৩. ওহে আল্লাহর উপর ঈমান আনয়নকারী ও তাঁর শরীয়তের উপর আমলকারীরা! তোমরা নবীর ঘরে খাবারের দাওয়াত স্বরূপ অনুমতি ব্যতীত প্রবেশ করো না। আর খাবার পাক হওয়ার অপেক্ষায় বেশীক্ষণ বিলম্ব করো না। তবে আহŸান করা হলে প্রবশ করে খাবার খেয়ে বেরিয়ে পড়বে। একে অপরের সাথে মজা করে গল্প গুজবে লিপ্ত হবে না। এহেন কাজ নবীকে কষ্ট দেয়। কিন্তু তিনি লজ্জায় বেরিয়ে যেতে বলতে পারেন না। পক্ষান্তরে আল্লাহ হকের নির্দেশ দিতে লজ্জা বোধ করেন না। তাই তিনি তোমাদেরকে বেরিয়ে যাওয়ার নির্দেশ দিচ্ছেন। যাতে দেরী করার মাধ্যমে তাঁকে তোমরা কষ্ট না দাও। আর তোমরা নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর স্ত্রীদের নিকট থেকে বর্তন জাতীয় প্রয়োজনীয় কিছু চাইলে পর্দার আড়াল থেকে চাও। তাদের নিকট থেকে সরাসরি তা চাইবে না। যাতে তোমাদের দৃষ্টি তাদের উপর না পড়ে। রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর মর্যাদা রক্ষার্থে ও তাদেরকে হেফাজত করার নিমিত্তে। বস্তুতঃ তোমাদের পর্দার আড়াল থেকে চাওয়া তোমাদের ও তাদের অন্তরের পরিচ্ছন্নতার জন্য সহায়ক। যাতে শয়তান তোমাদেরকে ও তাদেরকে মন্দ কাজের প্ররোচনা ও প্রলোভন দ্বারা বিভ্রান্ত না করে। তোমাদের জন্য হে মুমিনগণ! উচিৎ নয় যে, কথা বলার উদ্দেশ্যে অপেক্ষা করে কিংবা তাঁর স্ত্রীদেরকে বিয়ে করার মাধ্যমে আল্লাহর রাসূূলকে কষ্ট পৌঁছাও। কেননা, তাঁরা হচ্ছেন উম্মাহাতুল মুমিনীন। আর কারো পক্ষে স্বীয় মাকে বিয়ে করা বৈধ নয়। এহেন কষ্ট যার ধরনসমূহের মধ্যে রয়েছে তাঁর স্ত্রীদেরকে তাঁর মৃত্যুর পর বিয়ে করা, হারাম হওয়ার পাশাপাশি আল্লাহর নিকট মহা অন্যায়।
৫৪. তোমরা যদি কোন কজের কথা তোমাদের মনের মধ্যে গোপন রাখ কিংবা প্রকাশ করো তা আল্লাহর নিকট গোপন থাকে না। কেননা, আল্লাহ সকল বিষয়ে পরিজ্ঞাত। তাঁর নিকট তোমাদের কিংবা অন্যদের কারো কাজ গোপন নয়। ফলে তিনি ভাল কাজের বিনিময়ে ভাল আর মন্দ কাজের বিনিময়ে মন্দ বদলা প্রদান করবেন।
৫৫. তাঁদেরকে দেখতে কিংবা তাঁদের সাথে পর্দা ব্যতীত কথা বলতে যেসব ব্যক্তির জন্য কোন বাধা নেই তারা হচ্ছেন পিতা, সন্তান, জন্ম সূত্রে কিংবা দুগ্ধ পান সূত্রে আবদ্ধ ভ্রাতা। যেমনটি তাঁদের সাথে কথা বলতে মুমিন রমণীদের ও তাদের দাস-দাসীদের কোন পাপ নেই। আর হে মুমিন রমণীরা! তোমরা আল্লাহকে তাঁর আদেশ-নিষেধের ব্যাপারে ভয় করো। কেননা, তিনি তোমাদের পক্ষ থেকে যা কিছু প্রকাশ পায় সবই প্রত্যক্ষ করেন।
৫৬. অবশ্যই আল্লাহ স্বীয় ফিরিশতাদের নিকট রাসূল মুহাম্মদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর প্রশংসা করেন। আর তাঁর ফিরিশতারা তাঁর জন্য দো‘আ করেন। ওহে আল্লাহর উপর ঈমান আনয়নকারী ও তাঁর বান্দাদের উদ্দেশ্যে প্রবর্তিত শরীয়তের উপর আমলকারীরা! তোমরা রাসূলের উপর দরুদ ও সালাম পেশ করো।
৫৭. অবশ্যই যারা আল্লাহ ও তদীয় রাসূলকে কথা কিংবা কাজের মাধ্যমে কষ্ট দেয় আল্লাহ তাদেরকে ইহ ও পরকালে তাঁর রহমতের চত্বর থেকে সরিয়ে দেন এবং তাঁর রাসূলকে কষ্ট দেয়ার প্রতিকার হিসাবে পরকালে তাদের উদ্দেশ্যে অপমানকর শাস্তি তৈরী করে রেখেছেন।
৫৮. আর যারা মুমিন পুরুষ ও নারীদেরকে কথা কিংবা কাজের মাধ্যমে অকারণে কষ্ট দেয় তারা প্রকাশ্য পাপ ও মিথ্যার ভার বহন করল।
৫৯. হে নবী! আপনি আপনার স্ত্রী, কন্যা ও মুমিন নারীদেরকে বলে দিন: তারা যেন তাদের পরিধেয় বস্ত্র দিয়ে শরীরকে এমনভাবে ঢেকে নেয় যাতে পর পুরুষদের সামনে তাদের গোপনীয় অঙ্গ প্রকাশ না পায়। এটি তাদেরকে স্বাধীন নারী বলে চিহ্নিত করার পক্ষে সহায়ক। ফলে তারা কষ্টের সম্মুখীন হবে না যেমন কষ্টের সম্মুখীন হয় পারাধীন নারীরা। আল্লাহ তাঁর তাওবাকারী বান্দাদের জন্য ক্ষমাশীল ও দয়ালু।
৬০. যদি মুনাফিকরা কুফরি গোপন রাখা ও ইসলাম প্রকাশ করার মাধ্যমে তাদের মুনাফিকী থেকে বিরত না হয় আর যাদের অন্তর প্রবৃত্তির সাথে সম্পৃক্ত হওয়ার ফলে তাতে পাপ জায়গা করে নিয়েছে আর যারা মুসলমানদের মাঝে বিভেদ সৃষ্টি করার মানসে মদীনায় মিথ্যা সংবাদ নিয়ে আসে তারা ক্ষান্ত না হলে হে রাসূল! আমি তাদেরকে শাস্তি দেয়ার জন্যে আপনাকে নির্দেশ প্রদান করবো এবং আমি আপনাকে তাদের উপর জয়ী করবো। বিধায় তারা ফাসাদ সৃষ্টির কারণ স্বরূপ ধ্বংস কিংবা বিতাড়িত হওয়ার ফলে আপনার সাথে খুব অল্প দিন মদীনায় বসবাস করবে।
৬১. তারা আল্লাহর রহমত থেকে বিতাড়িত। যমীনে তাদের মুনাফিকী ও ফাসাদ সৃষ্টির কারণ স্বরূপ তাদেরকে যেখানেই পাওয়া যাবে পাকড়াও করা হবে এবং টুকরো টুকরো করে কাটা হবে।
৬২. মুনাফিকরা মুনাফিকী করলে তাদের জন্য আল্লাহর এই চিরন্তন নিয়ম। বস্তুতঃ অল্লাহর চিরাচরিত নিয়মের কোন ব্যতিক্রম নেই।
৬৩. হে রাসূল! আপনাকে মুশরিক ও ইহুদীরা অবিশ্বাসমূলক প্রশ্ন করে এই বলে যে, ক্বিয়ামত কবে হবে? আপনি তাদের উদ্দেশ্যে বলুন যে, এর জ্ঞান শুধু আল্লাহর নিকট; আমার নিকট এ ব্যাপারে কোন জ্ঞান নেই। আর আপনি কীভাবে জানবেন হে রাসূল! হতে পারে ক্বিয়ামত অতি নিকটবর্তী?
৬৪. আল্লাহ কাফির ও মুনাফিকদেরকে স্বীয় রহমত থেকে বঞ্চিত করেছেন এবং ক্বিয়ামতের দিন তাদের উদ্দেশ্যে লেলিহান শিখাবিশিষ্ট আগুন তৈরী করে রেখেছেন যা তাদের জন্য অপেক্ষা করছে।
৬৫. তারা তাদের উদ্দেশ্যে প্রস্তুতকৃত শাস্তিতে চিরকাল অবস্থান করতে থাকবে। সেখানে তারা তাদের উপকার সাধনকারী কোন বন্ধু পাবে না। আর না তাদের থেকে শাস্তি অপসারণকারী কোন সাহায্যকারী পাবে।
৬৬. ক্বিয়ামতের দিন তাদের চেহারা জাহান্নামে উলট পালট করানো হবে। তারা আক্ষেপ ও অপমানের সঙ্গে বলবে: হায়! মোদের আক্ষেপ। যদি আমরা দুনিয়ার জীবনে আদেশ-নিষেধ মান্য করার মাধ্যমে আল্লাহর আনুগত্য করতাম আর যদি রাসূলের আনিত বিধানে তাঁর আনুগত্য করতাম।
৬৭. এসব লোকেরা একটি অতি দুর্বল ও বাতিল প্রমাণ নিয়ে এসেছে। তারা বলে: আমরা আমাদের গোত্রের নেতা ও বড়দের আনুগত্য করেছি। ফলে তারা আমাদেরকে পথভ্রষ্ট করেছে।
৬৮. হে আমাদের প্রতিপালক! আমাদেরকে প্রথভ্রষ্টকারী এসব নেতা ও বড়দের জন্য আমাদের শাস্তির চেয়ে দ্বিগুণ শাস্তির ব্যবস্থা করুন। কেননা, তারা আমাদেরকে বিভ্রান্ত করেছে। আর তাদেরকে আপনার রহমত থেকে বহু দূরে সরিয়ে দিন।
৬৯. ওহে আল্লাহর উপর ঈমান আনয়নকারী ও তাঁর শরীয়তের উপর আমলকারীরা! তোমরা তোমাদের রাসূলকে কষ্ট দিওনা। তাতে তোমরা তাদের মত হয়ে যাবে যারা মূসা (আলাইহিস-সালাম) কে কষ্ট দিয়েছিল তথা তাঁর শারীরিক দোষের কথা বলেছিল, যা থেকে মুক্ত হওয়ার কথা স্বয়ং আল্লাহ উল্লেখ করেছেন। ফলে তারা যে অপবাদ দিয়েছিল তা থেকে তাঁর পবিত্রতা প্রকাশ পেল। বস্তুতঃ মূসা (আলাইহিস-সালাম) আল্লাহর নিকট একজন সম্মানী ব্যক্তিত্ব ছিলেন, যার আবদার ফেরত দেয়া হত না। আর না তাঁর চেষ্টা নিস্ফল করা হত।
৭০. ওহে আল্লাহর উপর ঈমান আনয়নকারী ও তাঁর শরীয়তের উপর আমলকারীরা! তোমরা আল্লাহর আদেশ-নিষেধ মান্য করার মাধ্যমে তাঁকে ভয় করো। আর সঠিক ও সত্য কথা বলো।
৭১. তোমরা যদি আল্লাহকে ভয় করো আর সত্য কথা বল তবে আল্লাহ তোমাদের আমল সংশোধন করে দিবেন এবং তোমাদের পক্ষ থেকে তা কবুল করবেন। আর তোমাদের পাপ মোচন করবেন। ফলে এর জন্য তিনি পাকড়াও করবেন না। বস্তুতঃ যে আল্লাহ ও তদীয় রাসূলের আনুগত্য করবে সে মহা সাফল্যে সাফল্যমÐিত হবে। যে সফলতার সাথে কোন সফলতার তুলনা হবে না। আর এ হচ্ছে আল্লাহর সন্তুষ্টিলাভ ও জান্নাতে প্রবেশের সুযোগ।
৭২. আমি শরীয়তের বিধি-বিধান ও সম্পদ এবং রহস্যপূর্ণ সংরক্ষিত বিষয়াদিকে আসমান, যমীন ও পাহাড়সমূহের নিকট পেশ করলাম। তারা একে বহন করতে অপারগতা প্রকাশ করল এবং তার পরিণতিকে ভয় করল। তবে মানুষ তা বহন করল। নিশ্চয়ই সে নিজের উপর মহা অত্যাচারী ও পরিণতি সম্পর্কে অতি অজ্ঞ।
৭৩. মানুষ তা আল্লাহর ফয়সালায় বহন করল। যাতে করে আল্লাহ মুনাফিক ও মুশরিক পুরুষ ও নারীদেরকে তাদের মুনাফিকী ও শিরকের উপর শাস্তি প্রদান করেন। আর উত্তম পন্থায় বিধি-নিষেধের দায়িত্ব বহনকারী মুমিন পুরুষ ও নারীদের তাওবা কবুল করেন। আল্লাহ স্বীয় বান্দাদের মধ্যে তাওবাকারীদের জন্য ক্ষমাশীল ও তাদের প্রতি দয়াপরবশ।
سورة الأحزاب
معلومات السورة
الكتب
الفتاوى
الأقوال
التفسيرات

سورةُ (الأحزاب) من السُّوَر المدنيَّة، وقد تعرَّضتْ لذِكْرِ كثيرٍ من الأحداث والأحكام؛ على رأسِ تلك الأحداثِ قصةُ غزوة (الأحزاب)، وما تعلق بها مِن عِبَرٍ وعِظات؛ كحُسْنِ الظن بالله، والاعتماد عليه، مشيرةً إلى غَدْرِ اليهود، وأخلاقهم الشائنة، كما اشتملت السورةُ على ذكرِ آية الحِجاب، وذكرِ آداب الاستئذان، والدخول على النبيِّ صلى الله عليه وسلم، وخُتِمت السورةُ بكثيرٍ من التوجيهات والعِظات للمؤمنين.

ترتيبها المصحفي
33
نوعها
مدنية
ألفاظها
1303
ترتيب نزولها
90
العد المدني الأول
73
العد المدني الأخير
73
العد البصري
73
العد الكوفي
73
العد الشامي
73

* قوله تعالى: {اْدْعُوهُمْ لِأٓبَآئِهِمْ هُوَ أَقْسَطُ عِندَ اْللَّهِۚ فَإِن لَّمْ تَعْلَمُوٓاْ ءَابَآءَهُمْ فَإِخْوَٰنُكُمْ فِي اْلدِّينِ وَمَوَٰلِيكُمْۚ} [الأحزاب: 5]:

عن عائشةَ أمِّ المؤمنين رضي الله عنها: «أنَّ أبا حُذَيفةَ بنَ عُتْبةَ بنِ ربيعةَ بنِ عبدِ شمسٍ - وكان ممَّن شَهِدَ بَدْرًا مع النبيِّ صلى الله عليه وسلم - تَبنَّى سالمًا، وأنكَحَه بنتَ أخيه هندَ بنتَ الوليدِ بنِ عُتْبةَ بنِ ربيعةَ، وهو مولًى لامرأةٍ مِن الأنصارِ؛ كما تَبنَّى النبيُّ صلى الله عليه وسلم زيدًا، وكان مَن تَبنَّى رجُلًا في الجاهليَّةِ، دعَاه الناسُ إليه، ووَرِثَ مِن ميراثِه، حتى أنزَلَ اللهُ: {اْدْعُوهُمْ لِأٓبَآئِهِمْ} إلى قولِه: {وَمَوَٰلِيكُمْۚ} [الأحزاب: 5]؛ فرُدُّوا إلى آبائِهم؛ فمَن لم يُعلَمْ له أبٌ، كان مولًى وأخًا في الدِّينِ، فجاءت سَهْلةُ بنتُ سُهَيلِ بنِ عمرٍو القُرَشيِّ ثم العامريِّ - وهي امرأةُ أبي حُذَيفةَ بنِ عُتْبةَ - النبيَّ صلى الله عليه وسلم، فقالت: يا رسولَ اللهِ، إنَّا كنَّا نرى سالمًا ولدًا، وقد أنزَلَ اللهُ فيه ما قد عَلِمْتَ...» فذكَر الحديثَ. أخرجه البخاري (5088).

* قوله تعالى: {مِّنَ اْلْمُؤْمِنِينَ رِجَالٞ صَدَقُواْ مَا عَٰهَدُواْ اْللَّهَ عَلَيْهِۖ} [الأحزاب: 23]:

عن حُمَيدٍ الطَّويلِ، عن أنسِ بن مالكٍ رضي الله عنه، قال: «غابَ عَمِّي أنسُ بنُ النَّضْرِ عن قتالِ بَدْرٍ، فقال: يا رسولَ اللهِ، غِبْتُ عن أوَّلِ قتالٍ قاتَلْتَ المشرِكين، لَئِنِ اللهُ أشهَدَني قتالَ المشرِكين لَيَرَيَنَّ اللهُ ما أصنَعُ، فلمَّا كان يومُ أُحُدٍ، وانكشَفَ المسلمون، قال: اللهمَّ إنِّي أعتذِرُ إليك ممَّا صنَعَ هؤلاء - يعني أصحابَه -، وأبرَأُ إليك ممَّا صنَعَ هؤلاء - يعني المشرِكين -، ثم تقدَّمَ، فاستقبَلَه سعدُ بنُ مُعاذٍ، فقال: يا سعدُ بنَ مُعاذٍ، الجَنَّةَ ورَبِّ النَّضْرِ! إنِّي أجدُ رِيحَها مِن دُونِ أُحُدٍ، قال سعدٌ: فما استطَعْتُ يا رسولَ اللهِ ما صنَعَ». قال أنسٌ: «فوجَدْنا به بِضْعًا وثمانينَ ضَرْبةً بالسَّيفِ، أو طَعْنةً برُمْحٍ، أو رَمْيةً بسَهْمٍ، ووجَدْناه قد قُتِلَ، وقد مثَّلَ به المشرِكون، فما عرَفَه أحدٌ إلا أختُه ببنانِه». قال أنسٌ: كنَّا نُرى أو نظُنُّ أنَّ هذه الآيةَ نزَلتْ فيه وفي أشباهِه: {مِّنَ اْلْمُؤْمِنِينَ رِجَالٞ صَدَقُواْ مَا عَٰهَدُواْ اْللَّهَ عَلَيْهِۖ} [الأحزاب: 23] إلى آخرِ الآيةِ». وقال: «إنَّ أختَه - وهي تُسمَّى الرُّبَيِّعَ - كسَرتْ ثَنِيَّةَ امرأةٍ، فأمَرَ رسولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم بالقِصاصِ، فقال أنسٌ: يا رسولَ اللهِ، والذي بعَثَك بالحقِّ، لا تُكسَرُ ثَنِيَّتُها، فرَضُوا بالأَرْشِ، وترَكوا القِصاصَ، فقال رسولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم: «إنَّ مِن عبادِ اللهِ مَن لو أقسَمَ على اللهِ لَأبَرَّه»». أخرجه البخاري (٢٨٠٥).

* قوله تعالى: {وَكَفَى اْللَّهُ اْلْمُؤْمِنِينَ اْلْقِتَالَۚ} [الأحزاب: 25]:

عن أبي سعيدٍ الخُدْريِّ رضي الله عنه، قال: «شغَلَنا المشرِكون يومَ الخَنْدقِ عن صلاةِ الظُّهْرِ حتى غرَبتِ الشَّمْسُ، وذلك قبل أن يَنزِلَ في القتالِ ما نزَلَ؛ فأنزَلَ اللهُ عز وجل: {وَكَفَى اْللَّهُ اْلْمُؤْمِنِينَ اْلْقِتَالَۚ} [الأحزاب: 25]، فأمَرَ بِلالًا فأذَّنَ وأقامَ فصلَّى الظُّهْرَ، ثمَّ أمَرَه فأقامَ فصلَّى العصرَ، ثمَّ أمَرَه فأقامَ فصلَّى المغربَ، ثمَّ أمَرَه فأقامَ فصلَّى العِشاءَ». أخرجه النسائي (٦٦١).

* قوله تعالى: {يَٰٓأَيُّهَا اْلنَّبِيُّ قُل لِّأَزْوَٰجِكَ إِن كُنتُنَّ تُرِدْنَ اْلْحَيَوٰةَ اْلدُّنْيَا وَزِينَتَهَا فَتَعَالَيْنَ أُمَتِّعْكُنَّ وَأُسَرِّحْكُنَّ سَرَاحٗا جَمِيلٗا ٢٨ وَإِن كُنتُنَّ تُرِدْنَ اْللَّهَ وَرَسُولَهُۥ وَاْلدَّارَ اْلْأٓخِرَةَ فَإِنَّ اْللَّهَ أَعَدَّ لِلْمُحْسِنَٰتِ مِنكُنَّ أَجْرًا عَظِيمٗا} [الأحزاب: 28-29]:

عن عبدِ اللهِ بن عباسٍ رضي الله عنهما، قال: «لم أزَلْ حريصًا على أن أسألَ عُمَرَ رضي الله عنه عن المرأتَينِ مِن أزواجِ النبيِّ صلى الله عليه وسلم اللَّتَينِ قال اللهُ لهما: {إِن ‌تَتُوبَآ إِلَى اْللَّهِ فَقَدْ صَغَتْ قُلُوبُكُمَاۖ} [التحريم: 4]، فحجَجْتُ معه، فعدَلَ وعدَلْتُ معه بالإداوةِ، فتبرَّزَ حتى جاءَ، فسكَبْتُ على يدَيهِ مِن الإداوةِ فتوضَّأَ، فقلتُ: يا أميرَ المؤمنين، مَن المرأتانِ مِن أزواجِ النبيِّ صلى الله عليه وسلم اللَّتانِ قال اللهُ عز وجل لهما: {إِن ‌تَتُوبَآ إِلَى اْللَّهِ فَقَدْ صَغَتْ قُلُوبُكُمَاۖ} [التحريم: 4]؟ فقال: واعجبي لك يا بنَ عبَّاسٍ! عائشةُ وحَفْصةُ، ثمَّ استقبَلَ عُمَرُ الحديثَ يسُوقُه، فقال:

إنِّي كنتُ وجارٌ لي مِن الأنصارِ في بني أُمَيَّةَ بنِ زيدٍ، وهي مِن عوالي المدينةِ، وكنَّا نتناوَبُ النُّزولَ على النبيِّ صلى الله عليه وسلم، فيَنزِلُ يومًا وأنزِلُ يومًا، فإذا نزَلْتُ جِئْتُه مِن خَبَرِ ذلك اليومِ مِن الأمرِ وغيرِه، وإذا نزَلَ فعَلَ مِثْلَه، وكنَّا مَعشَرَ قُرَيشٍ نَغلِبُ النِّساءَ، فلمَّا قَدِمْنا على الأنصارِ إذا هم قومٌ تَغلِبُهم نساؤُهم، فطَفِقَ نساؤُنا يأخُذْنَ مِن أدبِ نساءِ الأنصارِ، فصِحْتُ على امرأتي، فراجَعتْني، فأنكَرْتُ أن تُراجِعَني، فقالت: ولِمَ تُنكِرُ أن أُراجِعَك؟! فواللهِ، إنَّ أزواجَ النبيِّ صلى الله عليه وسلم لَيُراجِعْنُه، وإنَّ إحداهنَّ لَتهجُرُه اليومَ حتى اللَّيلِ، فأفزَعَني، فقلتُ: خابَتْ مَن فعَلَ منهنَّ بعظيمٍ، ثم جمَعْتُ عليَّ ثيابي، فدخَلْتُ على حَفْصةَ، فقلتُ: أيْ حَفْصةُ، أتُغاضِبُ إحداكنَّ رسولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم اليومَ حتى اللَّيلِ؟ فقالت: نَعم، فقلت: خابَتْ وخَسِرتْ! أفتأمَنُ أن يَغضَبَ اللهُ لغضَبِ رسولِه صلى الله عليه وسلم فتَهلِكِينَ؟! لا تَستكثري على رسولِ اللهِ صلى الله عليه وسلم، ولا تُراجِعيه في شيءٍ، ولا تهجُريه، واسأليني ما بدا لكِ، ولا يغُرَّنَّكِ أن كانت جارتُك هي أوضأَ منك، وأحَبَّ إلى رسولِ اللهِ صلى الله عليه وسلم - يريدُ عائشةَ -.

وكنَّا تحدَّثْنا أنَّ غسَّانَ تُنعِلُ النِّعالَ لغَزْوِنا، فنزَلَ صاحبي يومَ نَوْبتِه، فرجَعَ عِشاءً، فضرَبَ بابي ضربًا شديدًا، وقال: أنائمٌ هو؟! ففَزِعْتُ، فخرَجْتُ إليه، وقال: حدَثَ أمرٌ عظيمٌ، قلتُ: ما هو؟ أجاءت غسَّانُ؟ قال: لا، بل أعظَمُ منه وأطوَلُ، طلَّقَ رسولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم نساءَه، قال: قد خابَتْ حَفْصةُ وخَسِرتْ، كنتُ أظُنُّ أنَّ هذا يُوشِكُ أن يكونَ، فجمَعْتُ عليَّ ثيابي، فصلَّيْتُ صلاةَ الفجرِ مع النبيِّ صلى الله عليه وسلم، فدخَلَ مَشرُبةً له، فاعتزَلَ فيها، فدخَلْتُ على حَفْصةَ فإذا هي تَبكِي، قلتُ: ما يُبكِيكِ؟ أوَلَمْ أكُنْ حذَّرْتُكِ؟! أطلَّقَكنَّ رسولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم؟! قالت: لا أدري! هو ذا في المَشرُبةِ، فخرَجْتُ، فجِئْتُ المِنبَرَ، فإذا حَوْلَه رَهْطٌ يَبكِي بعضُهم، فجلَسْتُ معهم قليلًا، ثم غلَبَني ما أجدُ، فجِئْتُ المَشرُبةَ التي هو فيها، فقلتُ لغلامٍ له أسوَدَ: استأذِنْ لِعُمَرَ، فدخَلَ، فكلَّمَ النبيَّ صلى الله عليه وسلم، ثم خرَجَ، فقال: ذكَرْتُك له فصمَتَ، فانصرَفْتُ حتى جلَسْتُ مع الرَّهْطِ الذين عند المِنبَرِ، ثمَّ غلَبَني ما أجدُ، فجِئْتُ، فذكَرَ مِثْلَه، فجلَسْتُ مع الرَّهْطِ الذين عند المِنبَرِ، ثمَّ غلَبَني ما أجدُ، فجِئْتُ الغلامَ، فقلتُ: استأذِنْ لِعُمَرَ، فذكَرَ مِثْلَه، فلمَّا ولَّيْتُ منصرِفًا، فإذا الغلامُ يَدْعوني، قال: أَذِنَ لك رسولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم، فدخَلْتُ عليه، فإذا هو مضطجِعٌ على رمالِ حصيرٍ ليس بَيْنه وبَيْنه فِراشٌ قد أثَّرَ الرِّمالُ بجَنْبِه، متَّكِئٌ على وسادةٍ مِن أَدَمٍ حَشْوُها لِيفٌ، فسلَّمْتُ عليه، ثم قلتُ وأنا قائمٌ: طلَّقْتَ نساءَك؟ فرفَعَ بصَرَه إليَّ، فقال: «لا»، ثم قلتُ وأنا قائمٌ أستأنِسُ: يا رسولَ اللهِ، لو رأَيْتَني وكنَّا مَعشَرَ قُرَيشٍ نَغلِبُ النِّساءَ، فلمَّا قَدِمْنا على قومٍ تَغلِبُهم نساؤُهم، فذكَرَه، فتبسَّمَ النبيُّ صلى الله عليه وسلم، ثم قلتُ: لو رأَيْتَني، ودخَلْتُ على حَفْصةَ، فقلتُ: لا يغُرَّنَّكِ أنْ كانت جارتُكِ هي أوضأَ منكِ وأحَبَّ إلى النبيِّ صلى الله عليه وسلم - يريدُ عائشةَ -، فتبسَّمَ أخرى، فجلَسْتُ حينَ رأَيْتُه تبسَّمَ، ثم رفَعْتُ بصَري في بيتِه، فواللهِ ما رأَيْتُ فيه شيئًا يرُدُّ البصَرَ غيرَ أَهَبَةٍ ثلاثةٍ، فقلتُ: ادعُ اللهَ فَلْيُوسِّعْ على أُمَّتِك؛ فإنَّ فارسَ والرُّومَ وُسِّعَ عليهم، وأُعطُوا الدُّنيا وهم لا يعبُدون اللهَ، وكان متَّكِئًا، فقال: «أوَفِي شكٍّ أنتَ يا بنَ الخطَّابِ؟! أولئك قومٌ عُجِّلتْ لهم طيِّباتُهم في الحياةِ الدنيا»، فقلتُ: يا رسولَ اللهِ، استغفِرْ لي، فاعتزَلَ النبيُّ صلى الله عليه وسلم مِن أجلِ ذلك الحديثِ حينَ أفشَتْهُ حَفْصةُ إلى عائشةَ، وكان قد قال: «ما أنا بداخلٍ عليهنَّ شهرًا»؛ مِن شِدَّةِ مَوْجِدتِه عليهنَّ حينَ عاتَبَه اللهُ، فلمَّا مضَتْ تِسْعٌ وعشرون، دخَلَ على عائشةَ، فبدَأَ بها، فقالت له عائشةُ: إنَّك أقسَمْتَ ألَّا تدخُلَ علينا شهرًا، وإنَّا أصبَحْنا لِتِسْعٍ وعِشْرينَ ليلةً أعُدُّها عدًّا؟! فقال النبيُّ صلى الله عليه وسلم: «الشَّهْرُ تِسْعٌ وعِشْرون»، وكان ذلك الشَّهْرُ تِسْعًا وعِشْرينَ، قالت عائشةُ: فأُنزِلتْ آيةُ التَّخييرِ، فبدَأَ بي أوَّلَ امرأةٍ، فقال: «إنِّي ذاكرٌ لكِ أمرًا، ولا عليكِ ألَّا تَعجَلي حتى تَستأمري أبوَيكِ»، قالت: قد أعلَمُ أنَّ أبوَيَّ لم يكُونا يأمُرانِي بفِراقك، ثم قال: «إنَّ اللهَ قال: {يَٰٓأَيُّهَا اْلنَّبِيُّ قُل لِّأَزْوَٰجِكَ} [الأحزاب: 28] إلى قولِه: {عَظِيمٗا} [الأحزاب: 29]»، قلتُ: أفي هذا أستأمِرُ أبوَيَّ؟! فإنِّي أريدُ اللهَ ورسولَه والدارَ الآخرةَ، ثم خيَّرَ نساءَه، فقُلْنَ مِثْلَ ما قالت عائشةُ». أخرجه البخاري (٢٤٦٨).

* قوله تعالى: {إِنَّ اْلْمُسْلِمِينَ وَاْلْمُسْلِمَٰتِ وَاْلْمُؤْمِنِينَ وَاْلْمُؤْمِنَٰتِ وَاْلْقَٰنِتِينَ وَاْلْقَٰنِتَٰتِ وَاْلصَّٰدِقِينَ وَاْلصَّٰدِقَٰتِ وَاْلصَّٰبِرِينَ وَاْلصَّٰبِرَٰتِ وَاْلْخَٰشِعِينَ وَاْلْخَٰشِعَٰتِ وَاْلْمُتَصَدِّقِينَ وَاْلْمُتَصَدِّقَٰتِ وَاْلصَّٰٓئِمِينَ وَاْلصَّٰٓئِمَٰتِ وَاْلْحَٰفِظِينَ فُرُوجَهُمْ وَاْلْحَٰفِظَٰتِ وَاْلذَّٰكِرِينَ اْللَّهَ كَثِيرٗا وَاْلذَّٰكِرَٰتِ أَعَدَّ اْللَّهُ لَهُم مَّغْفِرَةٗ وَأَجْرًا عَظِيمٗا} [الأحزاب: 35]:

عن أُمِّ عطيَّةَ نُسَيبةَ بنتِ كعبٍ رضي الله عنها: أنَّها أتت النبيَّ ﷺ، فقالت: «ما أرى كلَّ شيءٍ إلا للرِّجالِ، وما أرى النِّساءَ يُذكَرْنَ بشيءٍ»؛ فنزَلتْ هذه الآيةُ: {إِنَّ اْلْمُسْلِمِينَ وَاْلْمُسْلِمَٰتِ وَاْلْمُؤْمِنِينَ وَاْلْمُؤْمِنَٰتِ} [الأحزاب: 35] الآيةَ. أخرجه الترمذي (٣٢١١).

* قوله تعالى: {وَتُخْفِي فِي نَفْسِكَ مَا اْللَّهُ مُبْدِيهِ} [الأحزاب: 37]:

عن أنسِ بن مالكٍ رضي الله عنه، قال: «جاء زيدُ بنُ حارثةَ يشكو زَيْنَبَ إلى رسولِ اللهِ صلى الله عليه وسلم، فقال رسولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم: «أمسِكْ عليك أهلَك»؛ فنزَلتْ: {وَتُخْفِي فِي نَفْسِكَ مَا اْللَّهُ مُبْدِيهِ} [الأحزاب: 37]». أخرجه ابن حبان (٧٠٤٥).

* قوله تعالى: {فَلَمَّا قَضَىٰ زَيْدٞ مِّنْهَا وَطَرٗا زَوَّجْنَٰكَهَا} [الأحزاب: 37]:

عن أنسِ بن مالكٍ رضي الله عنه، قال: «لمَّا نزَلتْ هذه الآيةُ في زَيْنَبَ بنتِ جحشٍ {فَلَمَّا قَضَىٰ زَيْدٞ مِّنْهَا وَطَرٗا زَوَّجْنَٰكَهَا} [الأحزاب: 37]، قال: فكانت تَفخَرُ على أزواجِ النبيِّ صلى الله عليه وسلم؛ تقولُ: زوَّجَكنَّ أهلُكنَّ، وزوَّجَني اللهُ مِن فوقِ سَبْعِ سمواتٍ». أخرجه الترمذي (3213).

* قوله تعالى: {تُرْجِي مَن تَشَآءُ مِنْهُنَّ وَتُـْٔوِيٓ إِلَيْكَ مَن تَشَآءُۖ وَمَنِ اْبْتَغَيْتَ مِمَّنْ عَزَلْتَ فَلَا جُنَاحَ عَلَيْكَۚ} [الأحزاب: 51]:

عن عائشةَ أمِّ المؤمنين رضي الله عنها، قالت: «كنتُ أغارُ على اللاتي وهَبْنَ أنفُسَهنَّ لرسولِ اللهِ ﷺ، وأقولُ: تَهَبُ المرأةُ نفسَها؟ فلمَّا أنزَلَ اللهُ: {تُرْجِي مَن تَشَآءُ مِنْهُنَّ وَتُـْٔوِيٓ إِلَيْكَ مَن تَشَآءُۖ وَمَنِ اْبْتَغَيْتَ مِمَّنْ عَزَلْتَ فَلَا جُنَاحَ عَلَيْكَۚ} [الأحزاب: 51]، قالت: قلتُ: واللهِ، ما أرى رَبَّك إلا يُسارِعُ في هواك». أخرجه البخاري (٤٧٨٨).

* قوله تعالى: {يَٰٓأَيُّهَا اْلَّذِينَ ءَامَنُواْ لَا تَدْخُلُواْ بُيُوتَ اْلنَّبِيِّ إِلَّآ أَن يُؤْذَنَ لَكُمْ إِلَىٰ طَعَامٍ غَيْرَ نَٰظِرِينَ إِنَىٰهُ وَلَٰكِنْ إِذَا دُعِيتُمْ فَاْدْخُلُواْ فَإِذَا طَعِمْتُمْ فَاْنتَشِرُواْ وَلَا مُسْتَـْٔنِسِينَ لِحَدِيثٍۚ إِنَّ ذَٰلِكُمْ كَانَ يُؤْذِي اْلنَّبِيَّ فَيَسْتَحْيِۦ مِنكُمْۖ وَاْللَّهُ لَا يَسْتَحْيِۦ مِنَ اْلْحَقِّۚ وَإِذَا سَأَلْتُمُوهُنَّ مَتَٰعٗا فَسْـَٔلُوهُنَّ مِن وَرَآءِ حِجَابٖۚ ذَٰلِكُمْ أَطْهَرُ لِقُلُوبِكُمْ وَقُلُوبِهِنَّۚ وَمَا كَانَ لَكُمْ أَن تُؤْذُواْ رَسُولَ اْللَّهِ وَلَآ أَن تَنكِحُوٓاْ أَزْوَٰجَهُۥ مِنۢ بَعْدِهِۦٓ أَبَدًاۚ إِنَّ ذَٰلِكُمْ كَانَ عِندَ اْللَّهِ عَظِيمًا} [الأحزاب: 53]:

عن أنسِ بن مالكٍ رضي الله عنه، قال: «لمَّا تزوَّجَ رسولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم زَيْنَبَ بنتَ جَحْشٍ، دعَا القومَ، فطَعِموا ثمَّ جلَسوا يَتحدَّثون، وإذا هو كأنَّه يَتهيَّأُ للقيامِ، فلَمْ يقُوموا، فلمَّا رأى ذلك قامَ، فلمَّا قامَ قامَ مَن قامَ، وقعَدَ ثلاثةُ نفَرٍ، فجاءَ النبيُّ صلى الله عليه وسلم لِيدخُلَ فإذا القومُ جلوسٌ، ثمَّ إنَّهم قاموا، فانطلَقْتُ فجِئْتُ فأخبَرْتُ النبيَّ صلى الله عليه وسلم أنَّهم قد انطلَقوا، فجاءَ حتى دخَلَ، فذهَبْتُ أدخُلُ، فألقى الحِجابَ بَيْني وبَيْنه؛ فأنزَلَ اللهُ: {يَٰٓأَيُّهَا اْلَّذِينَ ءَامَنُواْ لَا تَدْخُلُواْ بُيُوتَ اْلنَّبِيِّ} [الأحزاب: 53] الآيةَ». أخرجه البخاري (٤٧٩١).

* سورةُ (الأحزاب):

سُمِّيت سورةُ (الأحزاب) بذلك؛ لأنَّ فيها ذِكْرَ أحزابِ المشركين مِن قُرَيشٍ وغطَفانَ وبعضِ العرب، الذين تَحزَّبوا واجتمعوا لغَزْوِ المسلمين بالمدينة، فردَّ اللهُ كيدهم في غزوة (الأحزاب) المعروفة.

اشتمَلتْ سورةُ (الأحزاب) على الموضوعات الآتية:

1. أمرُ النبيِّ صلى الله عليه وسلم بتقوى الله، والتوكل عليه (١-٣).

2. تصحيح مفاهيمَ اجتماعية خاطئة (٤-٥).

3. وَلاية النبيِّ صلى الله عليه وسلم العامة، وأخذُ اللهِ الميثاقَ من النبيِّين عليهم السلام (٦-٨).

4. قصة غزوة (الأحزاب) (٩-٢٠).

5. الرسول صلى الله عليه وسلم هو الأُسوة الحسنة، وأصحابه نجومٌ يُهتدى بها (٢١-٢٤).

6. نتيجة المعركة، وغدر اليهود (٢٥-٢٧).

7. النبي مُحمَّد صلى الله عليه وسلم (٢٨-٥٩) .

8. مع زوجاته رضوان الله عليهم (٢٨-٣٤) .

9. المساواة بين الرجال والنساء في التكليف والجزاء (٣٥).

10. قصته صلى الله عليه وسلم مع زينبَ رضي الله عنها (٣٦-٣٩).

11. خاتمُ النبيِّين وبعض صفاته (٤٠-٤٨) .

12. خصائصه في أحكام الزواج (٤٩-٥٢).

13. آداب دخول بيته، والأمر بالحِجاب (٥٣-٥٥).

14. مكانتُه، وحرمة إيذائه (٥٦- ٥٨).

15. حِجاب زوجاته والمرأة المسلمة (٥٩).

16. جزاء المنافقين والكفار (٦٠-٦٨).

17. توجيهاتٌ وعِظات للمؤمنين (٦٩-٧١).

18. عظمة تكليف الإنسان، وحملُه الأمانة (٧٢-٧٣).

ينظر: "التفسير الموضوعي لسور القرآن الكريم" لمجموعة من العلماء (6 /68).

حثَّتْ سورةُ (الأحزاب) على حُسْنِ الظنِّ بالله، والتوكُّلِ عليه؛ فالله هو صاحبُ الحِكْمة والقوَّة والقُدْرة، وهو المتصرِّفُ في الكون، يَعلَم ما يصلحُ للخلائق، ويُدبِّر لهم أحسَنَ تدبير؛ فيُعلِي شأنَ من يشاء، ويَخفِض شأنَ من يشاء.

وتسميتُها بـ(الأحزاب) أوضحُ دليلٍ على ذلك؛ بتأمُّل القصة التي أشارت إليها، ودلَّتْ عليها.

ينظر: "مصاعد النظر للإشراف على مقاصد السور" للبقاعي (2 /370).